রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধিভুক্ত রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব বয়োসায়েন্সের পরিচালকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটোকের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে কাজলা ফটোকে ইনস্টিটিউটের পরিচালক হাফিজুর রহমানকে মারধরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং প্রক্টর দপ্তরে পাঠায়।
নগরের মতিয়ার থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানান, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হঠাৎ তার ওপর চড়াও হয়। এ সময় কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। তবে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ জানালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ইনস্টিটিউটে ক্লাস-পরীক্ষা কিছুই হয় না। সেমিস্টার ফি নিয়ে তারা দুর্নীতি করে। অবিলম্বে ক্লাস-পরীক্ষা চালুর পাশাপাশি দুর্নীতির সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ইনস্টিটিউটের পরিচালকদের (ড. এফএম আলী হায়দার ও ড. হাফিজুর রহমান) কারণে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। অনিয়ম-দুর্নীতির কথা তুললে তারা নানাভাবে হুমকি-ধামকি দেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি কিন্তু তারাও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এসব কারণে আমাদের কোর্স শেষ হচ্ছে না। প্রতিনিয়ত আমরা মানসিকভাবে হতাশ হয়ে পড়ছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালক এফএম আলী হায়দার জানান, এখন পর্যন্ত যে সেমিস্টারের ফি নেওয়া হয়েছে, সেটা পড়ানো শেষ হয়েছে। তাদের পরীক্ষার বিষয়েও কাজ চলছে। তাছাড়া অর্থনৈতিক কোনো দুর্নীতি হয়নি। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি ছাড়া অর্থ লেনদেন সম্ভব নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ইনস্টিটিউটের পরিচালনা পর্ষদের সাথে আলোচনা করেছি। আগামী রবিবার পরীক্ষার ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে রাবি থেকে এই ইনস্টিটিউটের নবায়ন করা নেই। এর আগে, গতবছর অক্টোবর মাসে ইনস্টিটিউটে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা ও দুর্নীতির সুষ্ঠু সমাধান চেয়ে অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযোগ তোলেন, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের এই ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের ভাড়া বাড়িতে ক্লাস নেওয়া হয়। পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। গবেষণার যন্ত্রপাতি ও ল্যাব নেই।
সার্বিক বিষয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালনা পর্ষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাস বলেন, ইনস্টিটিউটের অচলাবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছিল। ফলে এই পর্ষদ ইনস্টিটিউটের আর্থিক ও অ্যাকাডেমিকসহ অন্যান্য বিষয়গুলো দেখভালের দায়িত্বে ছিল। তবে সব কিছু পর্যালোচনা করে পর্ষদ দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে এবং এই পর্ষদ বিলুপ্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল