জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) চারুকলা অনুষদের ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অবরোধ করে রেখেছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। এর আগে, একদল শিক্ষার্থীর দাবির মুখে গত ৩ নভেম্বর এক প্রশাসনিক বৈঠকে ভবনটির নির্মাণকাজ সাময়িকভাবে স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর ১ টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা এ অবরোধ শুরু করেন। ওইদিন রাত ১০ টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চলছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, ৩১ অক্টোবর প্রশাসনের সাথে এক বৈঠকে কিছু শিক্ষার্থী পরিবেশ ধ্বংস করে অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণকাজ স্থগিতের দাবি জানান। এর প্রেক্ষিতে, ৩ নভেম্বর এক প্রশাসনিক বৈঠকে চারুকলা অনুষদের ভবন নির্মাণকাজ সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, চারুকলা অনুষদের ভবন তাদের জন্য অতি প্রয়োজন। একটি মহলের অপতৎপরতার কারণে তাদের নির্মাণাধীন ভবনের কাজ বন্ধ করা হয়েছে। তাদের দাবি, অতি দ্রুত চারুকলা অনুষদের ভবন নির্মাণকাজ শুরু করার অনুমতি দিতে হবে।
চারুকলা বিভাগের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান ইশিকা বলেন, শ্রেণিকক্ষের সংকটের কারণে চারুকলা বিভাগের ৫৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এখনো একটি ক্লাসও করতে পারেনি। অন্যদিকে, ব্যাচগুলোর সময়সূচি একটির সাথে অন্যটির সাথে মিলে যাওয়ায় আমাদের বার্ষিক পরীক্ষাগুলো পিছিয়ে যাচ্ছে। এমনকি আজ ৪৯তম ব্যাচ তাদের পরীক্ষাও দিতে পারেনি শ্রেণিকক্ষের অভাবে। ক্যাম্পাসের অন্যান্য ভবনের নির্মাণকাজে কোনো বাধা না আসলেও, সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে কিছু গোষ্ঠী বারবার চারুকলা বিভাগের নির্মাণকাজে বাধা দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের কণ্ঠ কখনো শোনা হয় না। এই কারণেই আমরা এই অবরোধ করেছি এবং ভবন নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু করার দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, দুপুর ১টার দিকে শুরু হওয়া এ অবরোধের কারণে এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর এবং অন্যান্য কর্মচারীরা ভেতরে আটকে পড়েছেন। ওইদিন রাত ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দাবির বিষয়ে আগামী ২৮ নভেম্বর আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানালে নাকচ করে দেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. মাহফুজুর রহমান বলেন, কিছু শিক্ষার্থীর আপত্তির কারণে প্রশাসনিক বৈঠকের মাধ্যমে নির্মাণকাজ স্থগিত করা হয়। চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে সমস্যাটি সমাধানের জন্য আমরা একটি বৈঠকের পরিকল্পনা করেছিলাম, কিন্তু উপাচার্যের অনুপস্থিতির কারণে সেটি স্থগিত হয়। ২৮ নভেম্বর উপাচার্য ও চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে একটি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এদিকে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা প্রস্তাবিত বৈঠকের সময়সূচি প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং অবিলম্বে নির্মাণকাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন। তারা ঘোষণা দিয়েছেন যে তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন