দলীয় নেতাকর্মীসহ স্বজনদের আনাগোনায় আর মুখোর হয়ে উঠবে না নুরপুর বড়বাড়ি নামে খ্যাত বাড়িটি। বিপদে পড়লে আর মিলবে না সহযোগীতা। নেতাকর্মীরাও প্রয়াত এমপি মাহমুদ উস সামাদের নিথর দেহ নিজ চোখে না দেখে বিশ্বাস করতে পারছেন না যে তিনি আর নেই। বাড়ির উঠান, বৈঠকখানা, পুকুরপার এখন থেকে থাকবে শুনশান নিরবতা। এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী সামাদের প্রিয় জায়গা পুকুর ঘাটে বসে আহাজারি করতে অনেকেই দেখা যায়। নুরপুরের বাড়িটি মাহমুদ উস সামাদ ছাড়া যেন এখন মৃত্যুপুরী।
বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান করোনা আক্রান্ত এই সংসদ সদস্য। তার মৃত্যুর খবরে নেতাকর্মীরা বাড়িতে ভিড় করেন।
স্বজন-নেতাকর্মীরা আসছেন-যাচ্ছেন। সবাই বিষন্ন। কেউ কাঁদছেন। কেউবা স্মৃতিচারণ করছেন মিডিয়ার সামনে। বাড়ির যে কক্ষে নেতাকর্মীদের নিয়ে বসতেন, সেই কক্ষটি গোছানো। যে চেয়ারে বসে নেতাকর্মীদের সঙ্গে খোশগল্পে মাতোয়ারা হতেন, সেই চেয়ারটি খালি পড়ে আছে। নেই কেবল চেয়ারের মানুষটি। ঘরের দেয়ালে সাঁটানো ছবিতে তার বিভিন্ন সময়ের রাজনৈতিক বর্ণাঢ্য জীবনের ছবি। ঘরের গৃহকর্মী নির্বাক দৃষ্টিতে অপলকে দেখছিলেন দেয়ালে সাঁটানো মালিকের ছবি। মালিককে হারানোর ব্যথার ভার যেন তার কাছে না বলা আক্ষেপের।
মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর এপিএস জুলহাস আহমদ বলেন, গত রবিবার তিনি বাড়ি থেকে বিমানের ফ্লাইটে ঢাকা যান। যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতাল নিয়ে ভর্তি করা হয়। এরপর সোমবার সকালে করোনার নমুনা দিলে ওইদিন বিকেলে পরীক্ষায় ফলাফল পজিটিভ আসে।
মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর ভাগনে ওহিদুজ্জামান চৌধুরী সুফি বলেন, হার্টের সমস্যায় তিনি বাইপাস করিয়েছিলেন। করোনা আক্রান্তের পর প্লাজমা থেরাপিও দেওয়া হয়। কিন্তু তাকে বাঁচানো গেলো না।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুল আউয়াল কয়েস বলেন, আমাদের রজনৈতিক অভিভাবক ছিলেন মাহমুদ উস সামাদ। তিনি আমাদের এতিম করে চলে গেলেন।
মরহুমের স্বজনরা জানান, তার অন্তিম ইচ্ছা ছিল গ্রামের বাড়িতে একটি জানাজার। তার মরদেহ হেলিকপ্টারযোগে ফেঞ্চুগঞ্জে নেওয়া হয়েছে। বিকেল ৫টায় উপজেলার কাসিম আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে বাড়ির সামনের মসজিদ সংলগ্ন নিজের হাতে গড়া কবরস্থানে দাফন করা হবে।
মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী ১৯৫৫ সালের ৩ জানুয়ারি ফেঞ্চুগঞ্জের নুরপুরের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী এবং মা আছিয়া খানম চৌধুরী।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন