ভারি বৃষ্টিপাত আর উজানের পানির স্রোতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার গুরমার হাওরের কান্দা উপচে এবং বাঁধ ভেঙে হাওরে হু হু করে পানি ঢুকছে।
রবিবার সকাল ৭টার দিকে টাঙ্গুয়া হাওর ওয়াচ টাওয়ার সংলগ্ন বর্ধিত গুরমার হাওর বাঁধে ফাটল দেখা দিয়ে হাওরে পানি প্রবেশ করছে। এসময় ২৭নং পিআইসি বাঁধটি দেবে যেতে দেখা গেছে।
হাওর পাড়ের গোলাবাড়ী গ্রামের খসসুল আলম বলেন, রবিবার সকাল ৭টা থেকে হাওরে পানি ঢুকতে শুরু করে। এভাবে হাওরে পানি প্রবেশ করতে থাকলে বর্ধিত গুরমা হাওর অংশের খাউজ্যাউরি, নোয়াল, আইন্যা, কলমা ও গলগলিয়া ও ধর্মপাশা উপজেলার বংশীকুন্ডা এলাকার হাওরগুলোর ফসলি জমিও ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিবে। গত ১০ দিন ধরে উপজেলা প্রশাসন, কৃষক ও এলাকাবাসী আপ্রাণ চেষ্টা করেও হাওরটি আর মনে হয় রক্ষা যাবে না। এসব হাওরের প্রায় ২ হাজার হেক্টর বোরো জমিতে আধাপাঁকা ধান রয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, এটা নতুন কোনো বাঁধ নয়, এ হাওরের পুরনো স্থায়ী বাঁধ। শনিবার রাতে প্রবল বৃষ্টি হয়ে হাওরে ব্যাপক পানির চাপ সৃষ্টি হয়ে সকালে বাঁধ উপচে হাওরে পানি ঢুকতে শুরু করছে।সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড গুরমা বাঁধের এ অংশটুকুটর প্রায় তিনশ গজ বাঁধে কোন কাজ করেননি। যার ফলে বাঁধের উপর দিয়ে উপচে এবছর পানি হাওরে প্রবেশ করছে।
রবিবার সকালে সংবাদ পেয়ে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান কবীর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বর্ধিত গুরমার হাওর বাঁধ পরিদর্শন করেছেন।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানির উচ্চতা রবিবার দুপুর ১২টায় ছিল পাঁচ দশমিক ৮৭ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি বেড়েছে ৪০ সেন্টিমিটার। এ ছাড়া জেলার সীমান্তবর্তী যাদুকাটায় এ সময়ে পানি বেড়েছে ৭১ সেন্টিমিটার, পাটলাই নদে ৪৩ সেন্টিমিটার। সুনামগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১৩ মিলিমিটার।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রায়হান কবীর বলেন, পাটলাই নদীর পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় অবস্থা এখন আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। ওয়াচ টাওয়ার সংলগ্ন বাঁধে মাটি ও বাঁশের চাটাই দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত