চা শ্রমিকদের ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে ১৯ দিন আন্দোলনের পর গতকাল রবিবার থেকে বাগানে কাজে ফিরেছেন চা শ্রমিকরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বাগান মালিকদের বৈঠক শেষে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই সিদ্ধান্তে চা শ্রমিকদের অনেকেই খুশি। চা শ্রমিকদের কেউ কেউ বলছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের কথা ভাবেন, তিনি আমাদের মজুরি বৃদ্ধি করে দিয়েছেন এজন্য আমরা ওনার জন্য আশীর্বাদ করি।’
বাগানে সাপ্তাহিক ছুটি থাকলেও রবিবার সকাল থেকে চা বাগানে চা পাতা তোলাসহ বাগানের বিভিন্ন কাজে ফিরতে দেখা গেছে চা শ্রমিকদের। সর্দারের নেতৃত্বে সেকশন থেকে খুশি মনে পাতা তুলে ঝুলি ভর্তি করেছেন তারা।
ভাড়াউড়া বাগানের নারী চা শ্রমিক উষা হাজরা আন্দোলন শেষে কাজে ফিরে জানালেন ‘পেটের দায়ে আন্দোলন করেছিলাম। আমাদের অনেকে অনেক মিথ্যা কথা বলেছে। অনেকে আন্দোলন বন্ধ করতে বলেছে। আমরা বলেছিলাম প্রধানমন্ত্রীর কথা ছাড়া আমরা আন্দোলন বন্ধ করবো না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা ভাবেন।’
উষা হাজরা আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেটা আমরা মেনে নিবো। কাল প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য ১৭০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করে দিলেন । আমরা প্রধানমন্ত্রীর জন্য আশীর্বাদ করি। তার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। তিনি চা-শ্রমিকদের জন্য ভাবেন।’
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব মেনে আজ (রবিবার) সাপ্তাহিক ছুটি থাকার পরেও সবাই কাজে যোগ দিয়েছেন। চা-বাগানের ফ্যাক্টরিগুলো চালু হয়েছে। কিছু চা-বাগানে চা পাতা রাখার জায়গায় পুরোনো চা পাতা থাকায় আজ কাজে যোগ দেয়নি। আজ ছুটির দিন থাকায় কিছু চা-বাগানে শ্রমিকরা যায়নি।’
এদিকে সোমবার থেকে পুরোদমে কাজ হবে বলে আশা করছেন চা-বাগান মালিক কতৃপক্ষ।
এর আগে গত ৯ আগস্ট থেকে দুই ঘন্টা করে চার দিন কর্মবিরতী ও ১৯ আগস্ট থেকে নূন্যতম মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট করে আসছিলেন চা-শ্রমিকরা।
অবশেষে গতকাল শনিবার ২৭ আগস্ট ২০২২ইং, বিকেলে মালিক পক্ষের সাথে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর শ্রমিকদের ১৭০ টাকা মজুরি দিতে রাজি হয় বাগান মালিকরা। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবের প্রেসব্রিফিংয়ের পর চা বাগানগুলোতে চলমান ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে যাওয়ার ঘোষনা দেন চা শ্রমিকরা।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল