অভিভাবকরা টিউশন ফি বৃদ্ধি ও স্কুল কর্তৃপক্ষের অনিয়মের প্রতিবাদ করায় শতাধিক শিক্ষার্থীকে বের করে দেয়া হয়েছে অনলাইন ক্লাস থেকে। এতে করে চট্টগ্রামের সাইডার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ছাত্রদের অনিশ্চিত হয়ে গেছে শিক্ষাজীবন। বের করে দেয়া শিক্ষার্থীদের ফের ক্লাসে যুক্ত করার জন্য উচ্চ আদালত থেকে দুই বার রুল জারি করলেও তা কর্ণপাত করছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. গাজী গোলাম মাওলা বলেন, ‘সাইডার স্কুলের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা পেয়ে প্রয়োজনীয় নেয়া হয়েছে। গ্রহণ করা পদক্ষেপের বিষয়ে উচ্চ আদালতকে লিখিত না জানানোয় মাউশিকে উচ্চ আদালত শোকজ করেছে। এখানে আমাদের ছোট্ট ভুল ছিল। যা মঙ্গলবার লিখিতভাবে আদালতেক জানানো হয়েছে।’
সাইডার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অভিভাবক ফোরামের সেক্রেটারি ব্যারিস্টার আফরোজা আকতার বলেন, ‘অনলাইন ক্লাস থেকে বের করে দেয়া শিক্ষার্থীদের ফের অনলাইনে যুক্ত, বৃদ্ধি করা টিউশন ফি পূর্ণ নির্ধারণ এবং নির্বাচিত স্কুল পরিচালনা কমিটির গঠনের জন্য উচ্চ আদালত থেকে রুল জারি করা হলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন করেনি। উল্টো উচ্চ আদালতের নির্দেশকে অমান্য করে নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। আমরা তাদের এমন আচরণের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
এ বিষয়ে স্কুলের অধ্যক্ষ জে সি ত্রিপাঠির টেলিফোন নাম্বারে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
জানা যায়, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ইংরেজি মাধ্যমে পরিচালিত স্কুলগুলো টিউশন ফি, শিক্ষক নিয়োগ এবং স্কুল পরিচনালনাসহ যাবতীয় বিষয় নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটি নির্ধারণের নিয়ম থাকলেও কোনটাই মানান হচ্ছে চট্টগ্রামের সাইডার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। করোনা প্রাবুর্ভাব কালে সরকারি গেজেট অমান্য করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ১২ শতাংশ বেতন দাবি করছে স্কুলটি। বেতন বৃদ্ধির পর গত ৩ অক্টোবর অভিভাবকরা একত্রিত হয়ে একটি অভিভাবক ফোরাম গঠন করেন। ৭ অক্টোবর বেতনের বিষয়টি পূর্ণ বিবেচনার জন্য সকল কর্তৃপক্ষের কাছে চিটি দেয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ১১ অক্টোবর পর থেকে প্রায় ১০০ শিক্ষার্থীকে গুগল ও জুম ক্লাস থেকে বের করে দেয়। এরপর অভিভাবক ফোরামের পক্ষে ব্যারিস্টার আফরোজা আকতারসহ তিন অভিভাবক উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন। ১ নভেম্বর বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচার মহিদ্দীন শামীম দ্বৈত বেঞ্চ শিক্ষার্থীদের ফের অনলাইন ক্লাবে যুক্ত করাসহ তিনটি রুল জারি করেন।
রিটের আদেশের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)কে নির্দেশনা দেন। উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা দেয়ার পর তা কর্ণপাত করেনি সাইডার স্কুল। এরপ্রেক্ষিত ২ ডিসেম্বর এক রিট শুনানিতে আদালত মাউশিকে শোকজ করেন। একই সাথে আগামী ১৭ ডিসেম্বর সাইডার স্কুলের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা স্বশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত