চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য ২ হাজার ১ শত ৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ১ হাজার ২ শত ২১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। সোমবার সকালে নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত বাজেট অধিবেশনে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এ বাজেট ঘোষণা করেন।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন ও প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির চৌধুরী।
এবার চলতি অর্থবছরের বাজেটে ত্রাণ, উন্নয়ন অনুদান ও অন্যান্য উৎস থেকে আয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯২ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালনা, উন্নয়ন, স্থায়ী সম্পদ, দেনা পরিশোধসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে মোট ২ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। বাজেটে কোনো ঘাটতি নেই, বরং ৩৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা উদ্বৃত্ত দেখানো হয়েছে। বাজেট বাস্তবায়নে অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সরকারি অনুদান প্রত্যাশা এবং নিজস্ব উৎস থেকে আয়ের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। মোট বাজেটের অর্ধেকের সমপরিমাণ—১ হাজার ৪৫ কোটি ২১ লাখ টাকা নিজস্ব উৎস থেকে আয় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বাকি অর্ধেক—১ হাজার ৯২ কোটি ৫ লাখ টাকা সরকারি অনুদান প্রত্যাশা করা হয়।
বাজেট বক্তৃতায় মেয়র বলেন, ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর দায়িত্ব গ্রহণকালে চসিকের দেনার পরিমাণ ছিল ৫৯৬ কোটি টাকা, যার মধ্যে ডিএসএল বাবদ বকেয়া ছিল ১৪৬ কোটি টাকা। ধারাবাহিক দেনা পরিশোধের মাধ্যমে বর্তমানে মোট দেনা ৪০০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে এবার প্রথমবারের মতো পৌরকর বাবদ ১৪০ কোটি টাকা আদায় সম্ভব হয়েছে।
মেয়র বলেন, উন্নয়ন সহায়তা বরাদ্দ খাতে ৬৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং বিশ্ব ব্যাংকের কোভিড-১৯ সহায়তা বাবদ প্রায় ৬০ কোটি টাকা ইতোমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। আয়কর বাবদ ৩৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, ভ্যাট বাবদ ৩৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আনুতোষিক ও ভবিষ্যৎ তহবিল বাবদ যথাক্রমে ১৯ কোটি ১৮ লাখ ও ২৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। প্রতি মাসে ৪০০ জনকে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে আনুতোষিক প্রদান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, জাইকার সহায়তায় আধুনিক বাজেট ও হিসাবরক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে অটোমেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করছি, আগামী অর্থবছরের মধ্যে পুরো হিসাব বিভাগ অটোমেশনের আওতায় চলে আসবে।
মেয়র বলেন, আমরা আয়বর্ধক প্রকল্প বাস্তবায়নের ওপর জোর দিচ্ছি। উপযুক্ত উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে রাজস্ব আয় বহুগুণে বাড়বে এবং চসিক আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হয়ে উঠবে। বর্তমানে চসিক এলাকায় ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৩টি হোল্ডিং ও ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৪টি ট্রেড লাইসেন্স আছে। কর ও লাইসেন্স ব্যবস্থাপনা অনলাইনে আনা হয়েছে এবং ৮টি রিভিউ বোর্ডের মাধ্যমে গণশুনানি পরিচালিত হচ্ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল