১৯ এপ্রিল, ২০২১ ১৯:৩১

লকডাউনে চট্টগ্রামে রিকসার দাপট, যাত্রীরা গুনছেন অতিরিক্ত ভাড়া

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

লকডাউনে চট্টগ্রামে রিকসার দাপট, যাত্রীরা গুনছেন অতিরিক্ত ভাড়া

ফাইল ছবি

ওষুধ কিনতে চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল গেইটের সামনে যাবেন শৈবাল আচার্য্য নামের একজন ব্যক্তি। চালককে রিকসা ভাড়া কত জানতে চাইলে তিনি বললেন ৫০ টাকা দিতে হবে। কারণ লকডাউন, তাই একটু ভাড়া বাড়তি দিতে হবে। এই রুটে স্বাভাবিক সময়ে রিকসা ভাড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা। একইভাবে আবুল মুনছুর চৌধুরী নামের এক ব্যবসায়ী মুরাদপুর রেলগেট থেকে যাবেন রেয়াজউদ্দিন বাজার তিন পোলের মাথায়। রিকসা ভাড়া দাবি করেন ১০০ টাকা। এখানেও স্বাভাবিক সময়ে ৬০-৭০ টাকা ভাড়া নেয়া হয়। মুরাদপুর এলাকায় রিকসার জন্য অপেক্ষায় থাকা এমন কথাগুলো বললেন যাত্রীরা।

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনে রিকসা চালকদের দাপটে যাত্রীরা এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে কর্মস্থলে যেতেই তর্ক বিতর্ক না করে অতিরিক্ত ভাড়া প্রদান করেই রিকসা যোগে সাধারণ যাত্রীরা চলাচল করছেন। লকডাউনে ফাঁকা শহরের প্রধান রাস্তাঘাট। চলছে না গণপরিবহন। তার জায়গা দখলে নিয়েছে রিকসা। চলছে রিকসা চালকদের দাপট। এদের কেউ স্বাভাবিক সময়ের মতো ন্যায্য ভাড়া দাবি করছেন। কেউ চাইছেন বাড়তি। অনেক চালক আবার সম্পূর্ণ মনগড়া ও অযৌক্তিক ভাড়া দাবি করছেন বলেও অভিযোগ আছে। 

এসব নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে যাত্রীদের। সন্তুষ্ট ও অসন্তুষ্টি দু'টোই আছে তাদের মাঝে। সোমবার (১৯ এপ্রিল) মুরাপদপুর, বহদ্দারহাট, ২ নং গেইট, চকবাজার, কাপ্তাই রাস্তার মাথাসহ নগরীর বিভিন্ন স্পটে এমন দৃশ্য সরেজমিনে দেখা যায়। অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে কয়েকজন রিকসা চালক বলেন, অনেক কষ্ট করে রিকসা চালাচ্ছি। অনুরোধ করি বলি, কিছু টাকা বাড়তি দেয়ার জন্য। তবে জোর করে কোন যাত্রীকে নিয়ে যেতে পারবো না। রাজি হলে যাবে, না হলে যাবে না।

চকবাজার এলাকার বসবাসকারী ইলিয়াছ বলেন, নিকটাত্মীয়কে পাঁচলাইশ এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে দেখতে যাচ্ছি। অন্য কোনো যানবাহন না থাকায় বাধ্য হয়েছেন রিকসা নিতে। স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে ২০ টাকা বেশি দাবি করছেন তারা। আবার রিকসাচালককে তেমন কিছু বলছেন না। যদি রিকশাও পাওয়া না যেত তখন কি হতো?

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীতে নিবন্ধিত রিকসা আছে ৭০ হাজার ১টি। এর বাইরে আরও প্রায় ৫০ হাজার নিবন্ধনহীন রিকসা রয়েছে। বাড়তি আয়ের আশায় প্রতি বছর রমজান মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নিম্নবিত্ত পরিবারের লোকজন ছুটে আসে চট্টগ্রাম শহরে। যাদের সিংহভাগ ঈদ পর্যন্ত রিকসা চালানোকে সাময়িক পেশা হিসেবে বেছে নেয়। অবশ্য এবার বিগত বছরগুলোর তুলনায় মৌসুমী রিকসা চালকদের উপস্থিতি করোনাসহ নানা কারণে কম দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতে হওয়া লোকজন গণপরিবহন না থাকায় বাধ্য হচ্ছেন রিকশায় চড়তে। এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন রিকসা চালকরা। নিচ্ছেন অতিরিক্ত ভাড়াও।
 


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর