চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মত কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছে ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কর্মবিরতি চলার কারণে হাসপাতালের কোনো ওয়ার্ডে চিকিৎসাসেবায় যোগ দেননি। তাছাড়া দুপুরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দোষীদের শাস্তি দাবি করে মানববন্ধন করেছেন। তবে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে ভর্তি থাকা রোগীরা চরমভাবে বিপাকে পড়ছেন বলে স্বজনদের অভিযোগ।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে চমেক ছাত্রলীগের দুটি পক্ষের কথা কাটাকাটির জের ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চমেকের ৫৭ ব্যাচের ইন্টার্ন চিকিৎসক হাবিবুর রহমান এবং ওসমান গনিসহ সাতজন আহত হন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে গত বুধবার থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতলে কর্মবিরতি শুরু করেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত বুধবার দুপুরে চমেক হাসপাতালের পরিচালকের সম্মেলন কক্ষে চমেক, চমেক হাসপাতাল, পুলিশ এবং বিদ্যমান দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে, ঘটনা তদন্তে মেডিকেলের দুজন উপ-পরিচালক ও মেডিসিন বিভাগের একজন অধ্যাপকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
চমেক হাসপাতাল ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের আহবায়ক ডা. ওসমান গণি বলেন, চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক ও অধ্যক্ষ বরাবরে লিখিতভাবে আমাদের দাবিসমূহ উপস্থাপন করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হঠাৎ করে কর্মবিরতি ডাকায় বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। ইন্টার্ন চিকিৎসক না থাকায় ডিউটি ডাক্তাররা ক্রমবর্ধমান রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। চিকিৎসা না পেয়ে অনেক রোগী ফিরেও যাচ্ছেন। ১২ নং হৃদরোগ বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা আরাফাত রহমান বলেন, বুকের ব্যাথা দেখা দেওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালের ভর্তি হওয়ার জন্য আসি। কিন্তু এখানে কর্মবিরতির কারণে চিকিৎসা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই বিকল্প ব্যবস্থা নিতে চলে যাচ্ছি।
এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় দোষীদের বিচার দাবিতে আজ দুপুরে চমেক ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসক এসোসিয়েশন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মেডিকেলের শান্ত পরিবেশ বিনষ্ট করতে একটি মহল কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার পরিকল্পিতভাবে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় মেডিকেলে বহিরাগতরা অবস্থান নিয়ে হাসপাতালে ভাঙচুর করে এবং ছাত্রাবাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এতকিছুর পরও প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। তাই অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন