চট্টগ্রামে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত অনলাইনে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করেছেন মোট ২৩ লাখ ৯০ হাজার ৭৫৪ জন। এর মধ্যে উপজেলার কেন্দ্রগুলোতে নিবন্ধন করেছেন ১৩ লাখ ৪০ হাজার ৭৩৪ জন এবং মহানগরের কেন্দ্রের জন্য নিবন্ধন করেছেন ১০ লাখ ৫০ হাজার ২০ জন। ইতোমধ্যে নগর ও উপজেলায় টিকা দেওয়া হয়েছে প্রায় ১২ লাখ। কিন্তু বাকি প্রায় ১২ লাখ টিকা প্রত্যাশীরা এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এর আগে অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রদানের সময়ও প্রায় দেড় লাখ টিকাপ্রত্যাশী অনিশ্চয়তায় পড়েছিলেন। একই সঙ্গে দারুণভাবে বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সরকার মানুষের জন্য দ্রুতগতিতে টিকার ব্যবস্থা করায় সুনাম কুড়িয়েছে। কিন্তু টিকা কেন্দ্রেগুলোর চরম অব্যবস্থাপনায় মানুষ অন্তহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ব্যবস্থাপনায় নেই কোনো শৃঙ্খলা, নেই কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ। কখন কোথায় কোন রুমে কী টিকা দেওয়া হবে- তাও কেউ জানে না। সব চলছে অপরিকল্পনা মতে।
জানা যায়, চট্টগ্রামে ফুরিয়ে এসেছে মাডার্নার মজুদ। ফলে বৃহস্পতিবার থেকে মডার্নার প্রথম ডোজ প্রদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে মডার্নার দ্বিতীয় ডোজ প্রদান কার্যক্রম চালু থাকবে। অন্যদিকে উপজেলা পর্যায়ে সিনোফার্মার টিকা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী ভারত থেকে কোভিশিল্ড নামে পরিচিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু পরে ভারত এ টিকা প্রদান বন্ধ করে দেয়। ফলে গত ২৫ মে থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান বন্ধ করা হয়। প্রায় আড়াই মাস পর গত ৮ আগস্ট থেকে আবারও শুরু হয় অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘মডার্না ও সিনোফার্ম মিলে প্রায় ৮০ হাজার ভ্যাকসিন এই মুহুর্তে মজুদ আছে। কিন্তু প্রায় ২৪ লাখের কাছাকাছি নিবন্ধন হয়ে গেছে। এরই মধ্যে অর্ধেকের বেশি ভ্যাকসিন প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। তাই দ্বিতীয় ডোজের জন্য মজুদ রেখে টিকা প্রদান বন্ধ করা হয়েছে। নিবন্ধনকৃতদের আর কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। টিকা আসলে আবারও কার্যক্রম শুরু হবে।
অন্যদিকে, চরমভাবে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিদেশগামীরা। জেনারেল হাসপাতালে মো. আরাফাত নামের এক প্রবাসী বলেন, হাসপাতাল থেকে দেয়া এসএমএসে জানানো হয়, ১৩ আগস্ট টিকার তারিখ। কিন্তু ১২ আগস্ট মডার্নার টিকাদান বন্ধ হয়ে যায়। এখন কি করব। হাসপাতালে এসেও কোনো সমাধান পাচ্ছি না। যদি মডার্নার টিকা দিতে না পারি তাহলে দেশের বাইরে যাওয়াটা অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে।
জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আহমেদ তানজিমুল ইসলাম বলেন, টিকা প্রত্যাশীরা নানা সমস্যা নিয়ে আসছেন। কিন্তু তাদের কোনোভাবেই বুঝানো যাচ্ছে না। তবে বিদেশগামী যাত্রীদের ব্যাপারে সরকার এখনও কোনো নির্দেশনা দেয়নি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন