স্যানিটেশন ও পানি বিশেষজ্ঞ আব্দুল হাকিম বলেছেন, দূষিত পানি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি ডেকে আনছে। অনেকেই ফুটিয়ে বা ক্লোরিনেট করে পানি পান করছেন। তবে এটা সবার পক্ষে সম্ভব না। বিশেষ করে বস্তি ও উপকূলীয় এলাকাগুলোর মানুষ বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত। সবার জন্য বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করা এখন অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ।
ইডব্লিউএমজিএল'র কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ প্রতিদিন আয়োজিত 'নিরাপদ পানি: সমস্যা ও করণীয়' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামের স্বাগত বক্তৃতার মধ্যে দিয়ে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকে পড়ে এসেছি 'পানির অপর নাম জীবন'। কিন্তু এখন পানিকে কতটা জীবন বলা যায়? কতটুকু নিরাপদ পানি আমরা পান করছি? নগরে যে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে তা কতটুকু নিরাপদ? পানির জারে শ্যাওলা পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে ভাবা জরুরি হয়ে পড়েছে। জনসম্পৃক্ত বিষয় নিয়ে এর আগেও বাংলাদেশ প্রতিদিন গোলটেবিলের আয়োজন করেছে। মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করে যাব।
গোলটেবিল বৈঠকটির মিডিয়া পার্টনার হিসেবে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে বসুন্ধরা গ্রুপের সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ২৪। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন নিউজ২৪ এর চিফ রিপোর্টার নাজনীন মুন্নী।
আব্দুল হাকিম বলেন, ৪০ লাখ বস্তিবাসী ২০০৭ সাল পর্যন্ত সুপেয় পানির আওতার বাইরে ছিল। কারণ তখন ওয়াসার পানি পেতে হোল্ডিং নম্বর লাগতো। পরে অনেক অ্যাডভোকেসির পর সেই নিয়ম তুলে দেয় ওয়াসা। বস্তিতে এখন ১৫০০ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তারা বিলও দিচ্ছে নিয়মিত। তবে পরীক্ষা করে ওয়াসার পানিতেও নানা পার্টিকেল পাওয়া গেছে। কারণ, ওয়াসার পাইপলাইনে লিকেজ আছে। সেখান থেকে নানা ময়লা ও দূষিত পদার্থ পানিতে মিশছে। পুরো পাইপলাইন পরিবর্তন করতে পারলে বিশুদ্ধ পানির সমস্যা দূর হতো। অবশ্য যে রিজার্ভারে পানি সংরক্ষণ করা হচ্ছে সেটাও নিয়মিত পরিস্কার করা জরুরি। কিন্তু দেখা গেছে ৫-৭ বছরেও সেটা করা হচ্ছে না। এতে জীবানু তৈরি হচ্ছে।
এদিকে ওয়াসার পানি ও বাজার থেকে কেনা বোতলজাত পানির দামের পার্থক্য দূর করার প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ওয়াসার একহাজার লিটার পানির দাম মাত্র ৮টাকা। পক্ষান্তরে বোতলজাত ৫০০ মি.লি. পানির দাম ১৫ টাকা। পানির দামের মধ্যে এই বড় পার্থক্য বিশেষ রেগুলেটরির মধ্যে এনে দূর করা দরকার।
গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরোর সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুসা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব শ্যামল কান্তি ঘোষ, আইসিডিডিআরবি'র জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. মনিরুল আলম, এলজিআরডি'র সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. শহীদুল হাসান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিশ্বব্যাংক প্রকল্পের পরিচালক এ কে এম ইব্রাহিম, প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সাউথ এশিয়া ওয়াশ রেজাল প্রোগ্রামের হেড অব কান্ট্রি কোঅর্ডিনেশন ইউনিট পার্থ হেফাজ সেখ, ওয়াসার সাবেক এমডি ও পানি বিশেষজ্ঞ ড. আজহারুল হক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব ওমর ফারুক, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইন্সটিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোস্তফা, র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম, সাইটসেভার্স'র অ্যাডভোকেসি এন্ড কমিউনিকেশন বিভাগের কোঅর্ডিনেটর আলিম বারী, ব্যারিস্টার আহসান হাবিব প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/০৯ এপ্রিল ২০১৬/ এস আহমেদ