বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সমাজেরই অংশ। সমাজের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষ দায়ী হতে পারে; কিন্তু তার দায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়। তাই কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিচ্ছিন্ন কিছু অনিয়ম ও দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সামগ্রিকভাবে দোষী সাব্যস্ত করা অনুচিত। আমরা তাই টিআইবি প্রণীত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করছি এবং তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও মহাসচিব অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
বুধবার বিকালে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে একটি লিখিত প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়,
টিআইবির প্রকাশিত প্রতিবেদন একদেশদর্শী বলে মনে করে ফেডারেশন। বলা হয়, প্রতিবেদনটি যত না বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতার প্রশ্নে প্রণীত হয়েছে তার চেয়েও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাব্যবস্থাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যেই প্রচারিত হয়েছে। বর্তমানে শিক্ষাকার্যক্রমে সচল ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে টিআইবি মাত্র ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এই প্রতিবেদনে তাদের মতামত উপস্থাপন করেছে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে টিআইবির গবেষণার সুপারিশ ইতিমধ্যেই প্রায় সম্পন্ন হয়েছে বলে জানানো হয় প্রতিবাদলিপিতে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, টিআইবি কর্তৃক প্রণীত প্রতিবেদনে সুপারিশ রয়েছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নের। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন এই সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়টি ইতোমধ্যেই প্রায় সম্পন্ন করেছে। প্রতিবেদন তৈরির প্রয়োজনে টিআইবির উচিত ছিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা।
বিজ্ঞাপনের অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগে বিভাগীয় সিএন্ডডি কমিটির সুপারিশ বিধিসম্মত বলেও জানানো হয়। বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিভাগের সিএন্ডডি কমিটি যদি বিভাগের চাহিদা সাপেক্ষে বিজ্ঞাপনের অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করে তাহলে এই ধরণের নিয়োগ বিধিসম্মত। এটিকেই টিআইবির গবেষক অনিয়ম হিসেবে চিহ্নিত করেছে; যা একান্তই অজ্ঞাতপ্রসূত। তদুপরি টিআইবির অনেক অভিযোগই অনির্দিষ্ট, একান্তই মনগড়া, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কেবল কিছু সংখ্যক চাকরিপ্রার্থীর অভিযোগ এবং পত্রিকার প্রতিবেদন অবলম্বনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে অভিযুক্ত করার এই প্রক্রিয়া ষড়যন্ত্রমূলক।