শিক্ষানগরী রাজশাহীতে নির্মিত হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু সিলিকন সিটি’ নামে একটি হাই-টেক পার্ক। রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার জিয়ানগর এলাকায় ৩১ দশমিক ৬৩ একর জমির ওপর তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর এই পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে ব্যয় হবে ২৮১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু সিলিকন সিটি নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এর মধ্যে দিয়ে বঙ্গবন্ধু সিলিকন সিটি নির্মাণের যাত্রা শুরু হলো। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালির আদলে অচিরেই এর অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ শুরু হবে। শেষ হবে আগামী তিন বছরের মধ্যে।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সিলিকন সিটির নির্মাণ শেষে এখানে ১৪ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। তবে এখানে রাজশাহীর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় এক লাখ শিক্ষার্থীকেই প্রশিক্ষণ দিয়ে তথ্য-প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে।
তিনি বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ রাজশাহীকে সারা বিশ্ব চিনবে এই বঙ্গবন্ধু সিলিকন সিটির মধ্য দিয়ে। রাজশাহীর মানুষ শুধু শ্রমনির্ভর থাকবে না। ভারতের ব্যাঙালোর, আমেরিকার সানফ্রান্সিসকো ও ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন সিটির মতো বঙ্গবন্ধু সিলিকন সিটিতেও বিশ্বমানের সফটওয়্যার তৈরি হবে। শুধু মেধার বিকাশ ঘটিয়ে রাজশাহীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে মোট ২৮টি হাই-টেক পার্ক নির্মাণ করা হবে। রাজশাহীর এই বঙ্গবন্ধু সিলিকন সিটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হলো। সারাদেশের শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের তথ্য-প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তোলা হবে। তারা তৈরি করবে বিশ্বমানের সফটওয়্যার। সেসব সফটওয়্যার বিদেশে বিক্রি করা হবে। রাজশাহীর এই বঙ্গবন্ধু সিলিকন সিটিকে ঘিরে বিদেশী অনেক প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
বঙ্গবন্ধু সিলিকন সিটির জন্য নির্ধারিত স্থানে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দীন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার প্রমুখ।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম জানিয়েছেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র থাকা অবস্থায় এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহীতে একটি সিলিকন সিটি নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠান। এরপর সেটি নিয়ে গবেষণা করা হয়। ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর রাজশাহীতে এক জনসভায় এটি নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে গত ২৩ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। এরপরই এর নির্মাণ কাজ শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, বঙ্গবন্ধু সিলিকন সিটির ভেতর ১০ তলা একটি ভবন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ৬২ হাজার বর্গফুট আয়তনের পাঁচতলা বিশিষ্ট একটি আইটি ইনকুবেটর কাম ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা হবে। রাজশাহীর আর্থ সামাজিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী এই প্রকল্পটি ব্যাপক অবদান রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/১৩ জানুয়ারি ২০১৭/হিমেল