বরিশাল জেনারেল (সদর) হাসপাতালে সরকারি চিকিৎসা পেতে আর্থিক সুবিধা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। সরকারিভাবে ওষুধের সরবরাহ নেই বলে তারা চিকিৎসা নিতে আসা মানুষের কাছ থেকে নানাভাবে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও সরকারি চিকিৎসা সেবায় কোন আর্থিক সুবিধা চাওয়া অনৈতিক এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন।
সোমবার সকালে নগরীর কাশীপুর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সৈয়দ হাওলাদারের ১১ মাস বয়সের শিশু কন্যা শর্মিলা আক্তারের বাম হাত ভেঙে যায়। শর্মিলাকে নিয়ে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে যান তার বাবা সৈয়দ হাওলাদার।
তিনি জানান, আহত শিশু মেয়েকে নিয়ে জরুরী বিভাগে গেলে সেখান থেকে তাকে জরুরী মেডিকেল অফিসারের কাছে পাঠানো হয়। জরুরী মেডিকেল অফিসার শিশুটির ভাঙা হাত এক্স-রে করতে দেন। এক্স-রে রিপোর্ট নিয়ে ফের জরুরী বিভাগের মেডিকেল অফিসারের কাছে গেলে সেখান থেকে তাকে তৃতীয় তলার অর্থোপেকিড ডাক্তারের কাছে পাঠানো হয়। অর্থপেডিক ডাক্তারের এক সহযোগী তার মেয়েরে হাত ব্যান্ডেজ করে দেয়ার জন্য ৪ হাজার টাকা দাবি করেন। নিরুপায় হয়ে তিনি ফের জরুরী বিভাগে গেলে সেখানকার কর্তব্যরতরা জানায়, হাসপাতালে সরকারিভাবে গজ-ব্যান্ডেজ সহ অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ নেই। এগুলো কিনতে ৪ হাজার টাকা প্রয়োজন। এরপর সে তার এক নিকটাত্মীয় ছাত্রলীগ নেতার সহায়তায় ফোন দেন জরুরী বিভাগে কর্মরতদের কাছে। তারা ফোনে ওই ছাত্রলীগ নেতার কাছে শিশুর হাত ব্যান্ডেজ করতে অপারগতা প্রকাশ করে বড় ডাক্তারের কাছে যেতে বলেন। পরে তিনি আবার অর্থপেডিক চিকিৎকের কাছে যান। এ সময় সেখানকার এক জুনিয়র অর্থোপেডিক চিকিৎসক ওই শিশুটির ভাঙা হাত ব্যান্ডেজ করে দেন। এর আগে ওই ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ৩শ’ ৩০ টাকার গজ-ব্যান্ডেজ সহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী বাইরে থেকে কিনে আনেন সৈয়দ হাওলাদার।
তার দাবি, তার কাছে টাকা ছিলো, কিন্তু গ্রামগঞ্জ থেকে অনেক অসহায়-বয়স্ক রোগী আসেন যাদের কাছে টিকেটের বাইরে কোন টাকা থাকে না। তাদের কি উপায় হয়। সংশ্লিস্টদের আর্থিক দাবি পূরণ করতে না পেরে চিকিৎসা না পেয়ে অনেকেই ফিরে যান। এর একটি বিহীত চান সৈয়দ হাওলাদারসহ ভুক্তভোগী রোগীরা।
বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন জানান, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার বিনিময়ে একটি পায়সাও নিতে পারবে না। এটা পুরোপুরি অনৈতিক। তিনি নিজেও চেয়েছিলেন এ ধরনের অভিযোগ আসুক। ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ করলে সংশ্লিস্ট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন সিভিল সার্জন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল