সরকারি গোডাউনে ধান-চাল সরবরাহে ব্যর্থ মিলারদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত শাস্তিমূলক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অথচ দু’সপ্তাহ আগে খাদ্য মন্ত্রণাালয় থেকে নির্দেশনা এসেছে বোরো মৌসুমে চুক্তিবদ্ধ যেসব মিলার চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ধান-চাল সরবরাহ করতে পারেনি তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয় শর্তভঙ্গ মিলারদের তালিকা এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি। তবে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক বলছেন জেলা থেকে তালিকা এখনো আসেনি। তাই চুক্তিভঙ্গ মিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি। এদিকে কালো তালিকা থেকে নিজেদের বাদ দিতে এক শ্রেণির মিলার বিভিন্নভাবে তদবির করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ২৬ এপ্রিল থেকে সারাদেশে রোবো মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু কথা ছিল। কিন্তু কৃষকের তালিকা প্রস্তুতকরণসহ বিভিন্ন কারণে বিলম্ব হওয়াতে রংপুরে নির্ধারিত তারিখের ২১ দিন পর এই কার্যক্রম শুরু হয়। ৩৬ টাকা দরে সিদ্ধ চাল, ৩৫ টাকা দরে আতপ চাল, ২৬ টাকা দরে ধান ও ২৮ টাকা দরে টন গম সংগ্রহ করা হয়। সূত্রমতে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ২ লাখ ৩২ হাজার ২২৮ মেট্রিক টন চাল এবং ১ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। রংপুর বিভাগে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মিলার সরকারি গোডাউনে ধান চাল সরবরাহের জন্য চুক্তি বদ্ধ হয়।
কিন্তু বাজারে প্রতি মণ ধান ৮০০ টাকা থেকে ৯২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। একইভাবে মোটা চালের খুচরো বাজার দর এলাকা ভেদে ৩৯ থেকে ৪১ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। অথচ চালের সরকারি সংগ্রহ মূল্য কেজি প্রতি ৩৬ টাকা। এ হিসাবে দেখা যায় প্রতি মণ ধান-চালের সরকারি সংগ্রহ মূল্য প্রতি কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা কম থাকায় তালিকাভুক্ত অনেক মিলারই সরকারি গোডাউনে ধান চাল সরবরাহ করেনি। আবার কেউ কেউ সরবরাহ করলেও সরকারি নির্দেশনার মোতাবেক শতভাগ ধান চাল সরবরাহ করেনি। তাই খাদ্য মন্ত্রণালয় দুসপ্তাহ আগে নির্দেশনা দিয়েছে যে সব মিলার শর্ত অনুযায়ি ধান চাল সরবরাহ করতে পারেনি তাদের কালো তালিকাভুক্ত করতে। কিন্তু নির্দেশনার বাস্তবায়ন রংপুরে এখন পর্যন্ত হয়নি। অভিযোগ উঠেছে কালো তালিকার হাত থেকে বাচতে চুক্তিভঙ্গকারি মিলাররা বিভিন্নভাবে তদবির করছে বলে রংপুর অঞ্চলে এখন পর্যন্ত কালো তালিকাভুক্ত মিলারদের তালিকা করা সম্ভব হয়নি। বাজার মূল্যের চেয়ে সরকারি সংগ্রহ মূল্য কম থাকায় সংগ্রহ অভিযান সফল হয়নি বলে খাদ্য বিভাগ মনে করছে।
রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুছ ছালাম বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক জেলা পর্যায় থেকে তালিকা দেয়ার কথা। কিন্তু জেলা থেকে এখন পর্যন্ত আঞ্চলিক অফিসে কোন তালিকা পাঠানো হয়নি।
তিনি বলেন, খুব দ্রুত শর্তভঙ্গকারি মিলারদের তালিকা করে তা প্রকাশ করা হবে। তিনি আরো জানান, রংপুর অঞ্চলে সংগ্রহ অভিযান ৭০ শতাংশ সফল হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল