রাত তখন আড়াইটা। রাস্তায়, স্টেশনে ও ফুটপাতে শুয়ে আছে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষগুলো। হঠাৎ ঘুম থেকে জাগিয়ে এক প্যাকেট খাবার হাতে তুলেন দিলেন এক ব্যক্তি। আর বললেন, “আসসালামুয়ালাইকুম আমি আপনাদের জেলার ডিসি। খাবারটি সেহেরিতে খেয়ে নিবেন। এতটুকুই করতে পারলাম। বিনিময়ে শুধু দোয়া করবেন”।
শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত এভাবেই নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ নিজে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষারা রেল স্টেশন , শহীদ মিনার ও খাজা মার্কেট এলাকায় আশ্রয়হীন ভাসমান মানুষদের মাঝে সেহরির জন্য খাবার বিতরণ করেন। ইতোমধ্যে ফেসবুকে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহর রাতভর খাবার বিতরণের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই এ উদ্যোগকে প্রশংসামূলক ও অনুপ্রেরণামূলক হিসেবে দেখছেন।
চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল নোমান নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, নারায়ণগঞ্জ ডিসির এ উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। সবাই আমরা এ রকম কাজ করে ভাসমানদের পাশে দাঁড়াতে পারি।
বিষয়টি নিশ্চিত হতে রবিবার দুপুরে মুঠোফোনে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি ডিসি হিসেবে নতুন এসেছি নারায়ণগঞ্জে। শুনলাম এখানে অনেক ভাসমান ছিন্নমূল মানুষ রাস্তায় না খেয়ে থাকে। তাই নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না। আসলে এটা আমার একার পক্ষে সম্ভব না। আমরা যদি সবাই মিলে ওই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াই তাহলে রাস্তায় কেউ ইনশাল্লাহ না খেয়ে থাকবে না।
তিনি আরও জানান, রাতে প্রায় ১৫০ জনের মাঝে এ খাবার বিতরণ করতে পেরেছিলাম। জেলার বিত্তশালী ও শিল্পপতিরা এগিয়ে এলে সমাজে এ ধরনের প্রান্তিক, ভবগুরে ,অসহায় মানুসের সংখ্যা কমে আসবে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গরীব অসহায় মানুষের প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ত্রাণ কার্যক্রম করোনাভাইরাস যত দিন থাকেবে ততদিন চলবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা