ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে রংপুর অঞ্চলে এবার বোরো ধান উৎপাদনে বাড়তি খরচ পড়বে প্রায় ৬৫ কোটি টাকা। অনেকে এখন বোরো ধানের বীজতলা পরিচর্যা করছেন, আবার কেউ কেউ চারা রোপণ করছেন বাড়তি খরচের চিন্তা মাথায় নিয়ে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৫ লাখ ৩ হাজার ৫৫০ হাজার হেক্টরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বোরো মৌসুমে এই অঞ্চলে বিদ্যুৎ, ডিজেল ও এনএনপি, সোলার চালিত প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার সেচ চালিত যন্ত্র দিয়ে জমিতে সেচ দেওয়া হয়েছে। এবারও সেই লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সেই হিসেবে গভীর নলকূপ বিদ্যুৎ চালিত ২ হাজার ৭৭০টি দিয়ে ৬৩ হাজার ৩৯৫ হেক্টর, ডিজেল চালিত ২৩টি গভীর নলকূপ দিয়ে ২৯৫ হেক্টর, এনএনপি বিদ্যুৎ চালিত ৪২টিতে ২৯১ হেক্টর, ডিজেল ৫২৬টি দিয়ে ৭৪৯ হেক্টর, সোলার চালিত ২৫টিতে ৪৯ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
অপরদিকে, বিদ্যুৎ চালিত অগভীর ৭১ হাজার ২৫৪টি নলকূপ দিয়ে ২ লাখ ৪ হাজার ৪৭০ হেক্টর, অগভীর ডিজেল চালিত ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৯টি সেচ যন্ত্র দিয়ে ২ লাখ ২০ হাজার ১০৩ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হবে। অগভীর ৯৯টি সোলারে ৮০৯ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
দেখা গেছে অগভীর ডিজেল চালিত সেচ যন্ত্র দিয়ে ২ লাখ ২০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে সেচ দেওয়া হবে। ডিজেলের মূল্য ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছে। ডিজেল প্রতি কেজিতে ১৫ টাকা বাড়ানোর ফলে কৃষকদের একর প্রতি বাড়তি খরচ পড়তে ৩০০ টাকার ওপরে। সেই হিসেবে প্রতি হেক্টরে বাড়তি খরচ পড়বে আড়াই হাজার টাকার ওপরে।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রংপুর অঞ্চলে ২ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে ডিজেল দিয়ে সেচ দিতে বাড়তি খরচ পড়বে ৬৫ কোটি টকার ওপরে। গত মৌসুমে বোরো ধানের কেজি প্রতি উৎপাদন খরচ ছিল ২৭ টাকা। এবার প্রতি কেজিতে ৩ টাকা বেশি খরচ পড়বে বলে মনে করছেন কৃষকরা।
পীরগাছা উপজেলার কল্যানী ইউনিয়নের বোরো চাষি বুলবুল মিয়া, মাহাবুবসহ অনেকেই জানালেন, ডিজেলের দাম বাড়ায় প্রতি একরে তাদের বাড়তি খরচ হবে ৩০০ টাকা। প্রতি হেক্টরে আড়াই হাজার টাকার ওপরে খরচ হবে। বাড়তি খরচের টাকা নিয়ে তারা চিন্তিত।
রংপুর সদরের কৃষক গৌরাঙ্গ মহন্ত, কাউনিয়ার রফিকুল ইসলাম, আফজাল হোসেন, মিঠাপুকুরের আশরাফুল ইসলামসহ অনেকেই জানালেন, এবারের আবহাওয়া এখন পর্যন্ত বোরোর অনুকূলে রয়েছে। আবহাওয়া এমন থাকলে ফলন ভালো হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন। তবে বাড়তি খরচ নিয়ে তারা চিন্তিত।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি ঢাকা অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (এলআর) কৃষিবিদ আবু সায়েম জানান, কৃষি বিভাগের লোকজন সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছেন। বোরো ধানের পরিবর্তে কৃষকদের আউস ধান চাষে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই