রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে ৭ মাস থেকে ভারতীয় নাগরিক প্রবীর মন্ডলের (৪১) লাশ পড়ে রয়েছে। লাশটি হস্তান্তরের জন্য স্থানীয় পুলিশ ভারতীয় দূতাবাসে যোগাযোগ করলেও নানা জটিলতায় লাশটি স্বজনদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে মানবাধিকার ব্যক্তিত্বরা চাচ্ছেন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুই দেশ আলোচনা করে দ্রুত সব জটিলতার অবসান ঘটিয়ে লাশটি হস্তান্তর করা হোক।
পাটগ্রাম পুলিশ ও রমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার নিমচা মৈত্রী স্ট্রিট এম আলম বাজার এলাকার মহাদেব মন্ডলের ছেলে প্রবীর মন্ডল ২০১৮ সালে ১৬ মার্চ বাংলাদেশে এসে ঢাকায় অবস্থান করেন। তিনি ছোটখাট ব্যবসা করতেন। ঢাকায় অবস্থান কালেই তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। পরে তিনি পাতানো এক বোনকে নিয়ে পাটগ্রামের পৌর এলাকায় ব্যাংককান্দা এলাকায় একজনের বাড়িতে উঠেন।
গত বছরের ৮ নভেম্বর তিনি অসুস্থ হলে তাকে পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে তিনি মারা যান। পরে লাশটি লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। লালমনিরহাট হাসপাতাল থেকে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য রমেক হাসপাতালে পাঠান। ময়নাতদন্ত শেষে লাশটি রমেক হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। সেখানেই এখন পর্যন্ত লাশটি রয়েছে।
পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। যে মেয়েটিকে সাথে করে প্রবীর মন্ডল পাটগ্রামে এসেছিল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অভিভাবকের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা রিপোর্ট না আসায় মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে এ বিষয়ে একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে।
পাটগ্রাম থানার ওসি ওমর ফারুক জানান, এবিষয়ে ভারতীয় দূতাবাসকে জানানো হয়েছে। মৃতের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। লাশ হস্তান্তরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। রমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল করিম বলেন, হিমঘরে অনুমতি সাপেক্ষ লাশ রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়াটি তিনি অবগত নন।
বাংলাদেশ-ভারত বর্ডার ভিকটিম লিগ্যাল রেসকিউ ফোরাম বাংলাদেশ অংশের আহ্বায়ক মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী এসএম আব্রাহাম লিংকন বলেন, একটি লাশ অনন্ত কাল রাখা যায় না। ভারত সরকার যদি মনে করেন লাশটি নিয়ে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করবেন তা হলে তা দ্রুত করা উচিত। অথবা ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে এদেশেই লাশ সমাহিত করতে হবে। তা না হলে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য মরদেহটি দান করা উচিত।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর
