রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত সদস্য পদে বাগমারার মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের দুই স্ত্রী প্রার্থী হয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন ইউপির চেয়ারম্যান রেজাউল হক। তিনি আওয়ামী লীগের স্থানীয় এমপি এনামুল হকের ছোট ভাই।
স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার বিষয়ে শুক্রবার তিনি নিজের ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দিয়ে আলোচনায় আসেন। এ ছাড়া শনিবার সন্ধ্যায় রেজাউল হক তার নিজ কার্যালয়ে ইউপির সাধারণ সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডেকে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার বিষয়টি জানান।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নাছিমা ও ফিরোজা দু’জনেই সক্রিয়ভাবে প্রচারণা শুরু করেন। এর মধ্যে রেজাউল নাছিমাকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য বলেন। তবে নাছিমা অনড় থাকায় রেজাউল শুক্রবার তাকে তালাক দেন। রেজাউল হকের দুই স্ত্রী হলেন- নাছিমা বিবি ও ফিরোজা খাতুন।
এর মধ্যে প্রথম স্ত্রী নাছিমা বিবি মাড়িয়া ইউনিয়নের শিকদারী এলাকায় রেজাউল হকের নিজস্ব বাড়িতে থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজা খাতুন বাগমারা উপজেলা পরিষদের ভবানীগঞ্জের একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগে দু’জনের কাউকেই সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, আগামী ১৭ অক্টোবর রাজশাহী জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে বাগমারা, মোহনপুর ও দূর্গাপুরে সংরক্ষিত সদস্য পদে সাতজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে মাড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যানের দুই স্ত্রী নাছিমা বিবি ও ফিরোজা খাতুন প্রার্থী হয়েছেন। অন্য পাঁচ প্রার্থী হলেন- পারুল বিবি, সুলতানা পারভীন, রাবেয়া খাতুন, লাল বানু ও নারগিস বিবি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথমে নাছিমা বিবি সংরক্ষিত সদস্য পদে প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। পরে রেজাউল হক তার দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজা খাতুনের পক্ষে প্রচারণা শুরু করেন। ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নাছিমা ও ফিরোজা দুজনেই সক্রিয়ভাবে প্রচারণা শুরু করেন। এর মধ্যে রেজাউল নাছিমাকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য বলেন। তবে নাছিমা অনড় থাকায় রেজাউল তাকে তালাক দেন।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রেজাউল হক তার নিজ দপ্তরে ইউপির সাধারণ সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডাকেন। এ সময় তিনি প্রথম স্ত্রী নাছিমা বিবিকে তালাক দিয়েছেন বলে জানান। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র তিনি উপস্থিত লোকজনকে দেখান। তার মতামত উপেক্ষা করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কারণে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন বলে উপস্থিত লোকজনকে জানান রেজাউল। পরে রাতে তিন তালাকের বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন।
রেজাউল হক বলেন, ‘স্ত্রী অবাধ্য হওয়ায় তাকে তালাক দিয়েছি। যে বউ কথা শোনে না, তেমন বউ থাকার দরকার কি?’ নাছিমা বিবি বলেন, তিনি তালাকের বিষয়টি শুনেছেন। তবে এখনও কোনো কাগজ পাননি। তিনি বর্তমানে স্বামীর বাড়িতেই আছেন এবং সেখানেই থাকবেন। নির্বাচন থেকেও তিনি সরে দাঁড়াবেন না। জয়-পরাজয় ও ভোটের ব্যবধানই প্রমাণ করবে কোন স্ত্রী কেমন জনপ্রিয়। নাছিমার প্রতিদ্বন্দ্বী ফিরোজা খাতুন মোবাইল ফোন না ধরায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর