বরিশাল থেকে ঢাকা রুটের ৪টি লঞ্চের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। যাত্রী স্বল্পতার কারণে একটি লঞ্চে ঢাকামুখি যাত্রী তুলে দিয়ে অন্য ৪টি লঞ্চ বরিশাল নদী বন্দরে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে।
ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে সংঘাত এবং হয়রানির আশঙ্কায় শুক্রবার বরিশাল নদী বন্দর থেকে ঢাকামুখি যাত্রী কম বলে জানিয়েছেন নৌযান কর্মকর্তরা। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবারও বরিশাল থেকে ঢাকামুখি ৩টি লঞ্চের যাত্রা বাতিল হয়েছে যাত্রী স্বল্পতার কারণে।
পদ্মা সেতু চালুর পর বরিশাল-ঢাকা নৌ পথে আগের তুলনায় যাত্রী কমেছে। কিন্তু তারপরও ঢাকা কিংবা বরিশালমুখি লঞ্চগুলোতে প্রতি ট্রিপে ৪শ’ থেকে হাজার যাত্রী হতো। বৃহস্পতি ও শুক্রবার উভয়প্রান্ত থেকে কিছুটা চাপ থাকতো যাত্রীদের। কিন্তু গত দু’দিন ধরে নৌ পথে বরিশাল থেকে ঢাকামুখি যাত্রীর খুবই স্বল্পতা দেখা দিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বরিশাল নদী বন্দর থেকে ঢাকা রুটের ৫টি লঞ্চের মধ্যে ২টি লঞ্চ স্বল্প সংখ্যক যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে ছেড়ে গেছে।
শুক্রবার রাতে বরিশাল নদী বন্দর থেকে ঢাকামুখি ৫টি লঞ্চের মধ্যে এমভি পারাবত-১১ নামে একটি লঞ্চ হাতে গোনা কিছু যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। এমভি সুন্দরবন-১১, এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০, এমভি সুরভী-৭ এবং এমভি পারাবত-১৮ নামে ৪টি লঞ্চ তাদের পূর্ব নির্ধারিত যাত্রা বাতিল করে নদী বন্দরে নোঙ্গর করে রেখেছে।
এমভি সুন্দরবন-১১ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. দুলাল বলেন, ঢাকামুখি যাত্রী কম। কেবিন বিক্রিও আশানুরূপ হয়নি। এ কারণে তারা ঢাকার যাত্রা বাতিল করে ঘাটে নোঙ্গর করে রেখেছেন। ঢাকায় শনিবার বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘাতের আশঙ্কা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ কারণে ঢাকামুখি যাত্রী কম বলে তিনি মনে করেন।
এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চের বরিশাল ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান বলেন, শুক্রবার ঢাকার উদ্দেশে যাওয়ার জন্য বরিশাল নদী বন্দরে ৫টি লঞ্চ প্রস্তুত ছিল। এরমধ্যে তাদের লঞ্চের (আওলাদ-১০) সাড়ে ৩শ’ কেবিনের মধ্যে মাত্র ১৮টি সিট বিক্রি হয়েছে। সুন্দরবন-১১ লঞ্চে মাত্র ১টি সোফা বিক্রি হয়েছে। এছাড়া অন্য লঞ্চে কোন আগাম বুকিং হয়নি। ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ঢাকাগামী যাত্রীরা ঝামেলার আশঙ্কা করছেন। এ কারণে ঢাকামুখি যাত্রীসংখ্যা একেবারে কম। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় সব লঞ্চের কর্মকর্তারা বসে একটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। পারাবত-১১ নামে একটি মাত্র লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে যাত্রার প্রস্তুতি নিলেও তাদের যাত্রী হাতেগোনা।
এমভি পারাবত-১১ লঞ্চের কেরানী মো. হৃদয় বলেন, তাদের লঞ্চে ১৮৮টি কেবিনের মধ্যে মাত্র ২৫টি কেবিন বিক্রি হয়েছে। ডেকে (তৃতীয় শ্রেণি) যাত্রী আছে সর্বসাকূল্যে ৬০ থেকে ৬৫ জন।
ওই লঞ্চের সুপারভাইজার কবির সিকদার বলেন, সব লঞ্চ কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বল্পসংখ্যক যাত্রী নিয়েই ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছেন তারা। তার মতে, ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের আগে গণ্ডগোলের কারণে যাত্রীদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে যাত্রীরা ঘর থেকে নামছে না বলে ধারণা করছেন তারা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত