বিএনপির ২৭ দফা সরকার ও তাদের সহযোগীরা ভালোভাবে দেখছে না এমন মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, দেশকে বাঁচানোর জন্য বিএনপি রূপ রেখা দিয়েছে, কিন্তু এই সরকার ও সরকারের সহযোগীরা এই রূপ রেখায় ভয় পেয়েছে।
তিনি বলেন, এই রূপরেখা প্রতিষ্ঠিত হলে দেশে গণতন্ত্র আসবে, দেশের মানুষের স্বাধিনতা আসবে।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ৯ মাস তিনি কারাবন্দি ছিলেন। তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। জীবনে কোন নির্বাচনে হারিনি। সাংবিধানিকভাবে তিনি জামিন পান। কিন্তু এখনো তাকে জামিন দেওয়া হয়নি। বন্দী করে রাখা হয়েছে। আমি তার মুক্তির দাবি করছি । বিএনপির মহাসচিবসহ এ পর্যন্ত যারা আটক হয়েছেন গ্রেফতার হয়েছেন তাদের সবার মুক্তি দাবি করছি।
তিনি বলেন, এ সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে, ২০১৪ ও ১৮ নির্বাচনের মাধ্যমে। বাঙালি জাতি অতিথি পরায়ন জাতি। এই দেশে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত এর গাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন আগে এক রাষ্ট্রদূত গুম হওয়া এক পরিবারের বাসায় গিয়েছিল। তার সাথে যে ব্যবহার করা হয়েছে তাতে পুরা বিশ্বে বাঙালি জাতির মাথা হেট হয়ে গেছে। এত নিকৃষ্ট হতে পারে কোন দল, কোন সরকার এটা ভাবা যায় না। এখন তারা বলছে তারা এটা বুঝতে পারে নাই।
দুদু বলেন, বিএনপি কি অবস্থায় আছে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত এখন বুঝতে পারবেন। আমেরিকা যদিও আগে সাতজনের নামে সেংশন দিয়েছিল। তবে এখন আরো ভালো করে বুঝব দেশের পরিস্থিতি কি।
তিনি বলেন, দেশ ডিজিটাল করার নামে ১০ থেকে ১২ লক্ষ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে তারা (আওয়ামী লীগ)। সরকারি বা বেসরকারি এমন কোন ব্যাংক নাই যেগুলো খোকলা করে দেয়া হয়নি। ধ্বংস করে দেওয়া হয়নি। ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত ব্যাংক ছিল সেই ব্যাংক কবে বন্ধ হয়ে যায় এরকম একটা পরিস্থিতিতে চলে গেছে। যারা সরকারের কাছে ঋণ দিত তারা এখন সরকারের কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছে।
দুদু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ স্মার্ট দেশ হবে। সে পর্যন্ত বাংলাদেশ থাকবে কিনা আমার সন্দেহ হয়। কারণ ১৪ বছরে দেশের যে অবস্থা করেছে। গণতন্ত্র হরণ করেছে, মানুষের বাক স্বাধীনতা নাই। পুলিশকে বিতর্কিত করা হয়েছে। সরকারি আমলা দের কে বিতর্কিত করা হয়েছে। এমন কোন সেক্টর নাই যে বিতর্কিত করা হয় নাই। এমন কোন পেশা নাই যে বিতর্কিত করা হয় নাই।
তিনি বলেন, এই দেশকে বাঁচানোর জন্য বিএনপি রূপ রেখা দিয়েছে, কিন্তু এই সরকার ও সরকারের সহযোগীরা এটা ভালো চোখে দেখছে না। ভালো না লাগারই কথা। কারণ এ রূপরেখা প্রতিষ্ঠিত হলে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। মানুষের স্বাধীনতা আসবে। দুর্নীতিবাজ, হত্যা লুণ্ঠন কারীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এইজন্যে তারা (আওয়ামী লীগ) রাষ্ট্র সংস্কারের ২৭ দফায় ভয় পেয়েছে।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় যদি আনতে হয় তাহলে ১৯৭১ সালের যে কর্মসূচি গণতন্ত্র, স্বাধীনতা অর্থনীতির মুক্তির লক্ষ্যে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটা ডিসেম্বর মাস এই মাসে বাংলাদেশ পাকিস্তানি আদলে চলুক এটা আমরা কোনভাবে মেনে নিতে পারি না। কারণ পাকিস্তানিরা গণতন্ত্রের কাছে পরাজিত হয়েছে। স্বাধীনতার কাছে পরাজিত হয়েছে। মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে পরাজিত হয়েছে, সেই জায়গায় আমরা যেতে চাই না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করে তারা চিরজীবন ক্ষমতায় থাকবে। এটা পাকিস্তানিরাও মনে করেছিল, কিন্তু তারা পরাজিত হয়েছে। এখন যারা মনে করছেন আজীবনের জন্য ক্ষমতায় থাকবেন তাদেরকে বলি গণতন্ত্র কখনো পরাজিত হয় না। গণতন্ত্রের কাছে কর্তৃত্ব বাদি শাসক সব সময় পরাজিত হয়। আপনি কি পরাজয়ের দিকে বর্তমান কর্তৃত্ব বাদি শাসকরা যাচ্ছে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমানের সভাপতিতে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোঃ রহমতউল্লাহ, জিনাব এর সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন