আন্তর্জাতিক প্রোটিন দিবস উপলক্ষে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘সকলের জন্য প্রোটিনের সহজ অ্যাক্সেস’ থিম নিয়ে একটি প্রোটিন সচেতনতামূলক উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছে ‘রাইট টু প্রোটিন’। বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এবারের লক্ষ্য প্রোটিন জাতীয় খাবারের সহজলভ্যতা বৃদ্ধি, এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং উন্নত পুষ্টি ও স্বাস্থ্য নিশ্চিতে প্রোটিনের গুরুত্ব সম্পর্কে সকলকে উৎসাহিত করা।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, দক্ষিণ এশিয়ায় জনসংখ্যা প্রায় ১ বিলিয়ন। এই অঞ্চলের বিভিন্ন অংশে খাদ্যস্ফীতি রোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৌশলগত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ‘সকলের জন্য প্রোটিনের সহজ অ্যাক্সেস’ থিমের সাথে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে, যার লক্ষ্য হলো সকলকে সহজলভ্য প্রোটিন খাদ্যের উৎস সম্পর্কে অবগত করা এবং সম্ভব্য সমাধানগুলো কাজে লাগিয়ে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা ও পুষ্টি নিরাপত্তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এর পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও পরিচালক খালেদা ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয় এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে পুষ্টি নিরাপত্তা উন্নতকরণ এবং প্রোটিনজাতীয় খাদ্য নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার তুলনামূলক কমলেও, মাতৃমৃত্যুর হার এবং কিশোরদের অপুষ্টি মোকাবেলায় এখনও অনেক কাজ বাকি আছে। প্রোটিন সম্পর্কে দেশে এখনও কুসংস্কার ও ভুল ধারণার পাশাপাশি জ্ঞান, দৃষ্টিভঙ্গি ও অনুশীলনে ঘাটতি রয়ে গেছে। তাই প্রোটিনের উৎসগুলো সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করার পাশাপাশি চাই কঠোর জনসচেতনতা।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) সভাপতি মশিউর রহমান বলেন, এ বছর প্রোটিন দিবস সামনে রেখে আমাদের লক্ষ্য হল সব ধরণের প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করে সকলকে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণে উত্সাহিত করা। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে একজন ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা তার স্বাস্থ্যের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। ফলে পুষ্টি, বিশেষ করে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা অপরিহার্য একটি বিষয়। পাশাপাশি এসব খাবারের উপকারিতা এবং সহজলভ্যতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে জোর প্রদান ও অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণে ইন্ডাস্ট্রি স্টেকহোল্ডারদের আমি আহ্বান জানাচ্ছি।
মার্কিন সয়াবিন রপ্তানি কাউন্সিলের (ইউএসএসইসি) ইউ.এস সয় এসএএএসএসএ-এর হেড অব মার্কেটিং ডিবা জিয়ানৌলিস বলেন, এ বছরের প্রোটিন দিবসের থিম নিয়ে আলোচনা, অনুষ্ঠান ও কর্মসূচীতে সকলকে অংশগ্রহণে আমরা উৎসাহিত করছি, যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্যের উৎস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে বলে আমার বিশ্বাস। প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা ও উৎস সম্পর্কে সকলকে অবগত করতে আমাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে, তবেই পরিবর্তন আসবে বলে আমরা মনে করি। সকলের জন্য পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় ‘সাসটেইনেবল প্রোটিন অপশন’ যোগ করার বিষয়ে আলোচনা জরুরি।
‘আন্তর্জাতিক প্রোটিন দিবস ২০২৩’ সমর্থনকারী পুষ্টিবিদ, খাদ্য-শিল্প বিশেষজ্ঞ, শেফ, ফুড ব্র্যান্ড এবং সমমনা মানুষদের মতে, সকলের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বিশ্বে পর্যাপ্ত প্রোটিন নিশ্চিত করা সম্ভব। তাই আয়োজকরা আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক প্রোটিন দিবস উদযাপন এবং ‘সকলের জন্য প্রোটিনের সহজ অ্যাক্সেস’ থিম প্রচারের লক্ষ্যে সকলকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত (www.righttoprotein.com) ওয়েবসাইটে জানা যাবে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক