রসিকের কর্মচারীদের সাথে পরিচ্ছনতাকর্মীদের সংঘর্ষ, আহত ৩৫

রংপুরে হরিজনদের সাথে সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুরে সিটি করপোরেশনের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এতে সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হয়। 

সিটি করপোরশন প্রাঙ্গণে হামলার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে সিটি করপোরেশন। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদের বিকেলে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন  করে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতী ঘোষণা করা হয়।  

হরিজন অধিকার আদায় সংগঠনের সভাপতি সুরেশ বাসফোর বলেন, বর্তমান সমাজে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সিটি কর্পোরেশনের অল্প বেতনে সংসার পরিচালনা করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে অসুস্থতা বা সমস্যায় পরে কাজে না গেলে সিটি কর্পোরেশন হাজিরা কেটে নেয়, ছাঁটাইকরণের হুমকি দেয়, গালিগালাজ করে। আজ ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সিটি করপোরেশনের মেয়রের সাথে কথা বলতে গেলে গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে আমাদের উপর হামলা করানো হয়। এতে হাসান নামে আহত একজন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছে। সানিক বাসফোরের পা ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া ডলি রানী, শিরিত বাসফোর, সুজন বাসফোর, সাজু বাসফোর, লক্ষ্মী হেলা, রাজ বাসফোরসহ ২৫/২৬ জন আহত হয়েছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, হরিজনদের সুরক্ষার জন্য আমি গামবুট, কোটিসহ বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী দিয়েছি। ইতোমধ্যে তাদের সকল যৌক্তিক দাবী প্রায় পূরণ করা হয়েছে। মাত্র দু’ঘন্টা পরিচ্ছন্নতার কাজ থাকলেও তারা সেটিও ভাল করে করে না। রাতে মাতাল হয়ে পড়ে থাকে। অথচ তাদের সুখে-দুঃখে আমি পাশে থাকলেও কুচক্রী মহলের ইন্ধনে তারা সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। রবিবার তারা ময়লা পরিস্কার না করলে আমি রাতে নিজে উপস্থিত থেকে নগরীর ময়লা পরিস্কার করিয়েছি। এরপর তারা বস্তায় করে ময়লা নিয়ে এসে নগরী নোংরা করেছে। আমি তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল, কিন্তু কোন অন্যায় তো বরদাস্ত করতে পারি না। হরিজনরা সিটি করপোরেশন ঘেরাও করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী করে। তাদের সরে যেতে বললে সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের উপর চড়াও হয় এবং পরবর্তীতে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। 

এদিকে সোমবার বিকেলে স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ১১ দফা দাবি আদায়ের পাশাপাশি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতী ঘোষণা করে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।  

মেট্রোপলিটন কোতয়ালী ওসি মাহফুজার রহমান বলেন, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি।  আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল