বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

তিন মুক্তিযোদ্ধার কবরের ওপর হচ্ছে মাদ্রাসা ভবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

তিন মুক্তিযোদ্ধার কবরের ওপর হচ্ছে মাদ্রাসা ভবন

রাজশাহীর পবা উপজেলায় তিন মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্তত ১৯ জনের কবরের ওপর একটি মাদ্রাসা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। জমিটি দখলে রাখতে উপজেলার খোলাবোনা দাখিল ও আলিম মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পারিবারিক কবরস্থানের ওপর এই ভবন নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ। এনিয়ে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে ২০১৫ সালে তারা আদালতে মামলাও               করেছেন। এই মামলা চলমান অবস্থায় সম্প্রতি আবার কাজ শুরু করা হয়। এনিয়ে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ হলে পুলিশ কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খোলাবোনা এলাকায় পাশাপাশি দুটি মাদ্রাসা। একটির নাম খোলাবোনা ফোরকানিয়া ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা। আরেকটি খোলাবোনা দাখিল ও আলিম মাদ্রাসা। দুই মাদ্রাসার মাঝে একটি সীমানা প্রাচীর। নতুন ভবনের জন্য পিলার তুলেছে আলিম মাদ্রাসা।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, যে স্থানে ভবন নির্মাণের পিলার তোলা হয়েছে সেটা আসলে কবরস্থান। এখানে মুক্তিযোদ্ধা তিন ভাইয়ের কবর রয়েছে। তারা হলেন- আনারুল ইসলাম, আসাদ আলী ও শাহজাহান আলী। জমিটি এখন ফোরকানিয়া মাদ্রাসার নামে রেকর্ড হয়ে আছে। কিন্তু জমিটি জোর করে দখলে নিতে কবরস্থানের ওপরেই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছে আলিম মাদ্রাসা।

বিষয়টি স্বীকার করেন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে নূরে আলম (৪০)। তিনি জানান, জমিটির মালিক ছিলেন প্রয়াত তিন মুক্তিযোদ্ধার চাচা জকিম উদ্দিন। এখানে তার মোট ৩৩ শতক জমি ছিল। তার মৃত্যুর পর কয়েকবছর আগে জমির ১০ জন ওয়ারিশ ২০ শতক জমি ফোরকানিয়া মাদ্রাসাকে দান করেন। কিন্তু পরে তারা দেখেন অনেক আগেই ভুল করে ওই মাদ্রাসার নামে ১০ শতক জমি রেকর্ড হয়ে গেছে। এখন ৩০ শতক জমিই রয়েছে ফোরকানিয়া মাদ্রাসার নামে। বাকি তিন শতক আছে জকিম উদ্দিনের ওয়ারিশদের। কিন্তু ফোরকানিয়া মাদ্রাসার নামে ৩০ শতক জমি থাকলেও এই জমিতেই ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছে আলিম মাদ্রাসা।

খোলাবোনা ফোরকানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক জিয়াউল করিম বলেন, ফোরকানিয়া মাদ্রাসা পরিচালিত হয় কওমি মাদ্রাসার অংশ হিসেবে। আর দাখিল-আলিম পরিচালিত হয় শিক্ষাবোর্ড থেকে। দুটি ভিন্ন মাদ্রাসা। একটি কখনো আরেকটির অংশ হতে পারে না। কিন্তু শুধু এই ১০ শতকই নয়, ফোরকানিয়া মাদ্রাসার আরও সম্পত্তির দখল নিতে আলিম মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দুটিকে একই প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে।

 

 

সর্বশেষ খবর