রবিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

জোর করে নেওয়া ত্রাণের চাল ফেরত দিলেন কাউন্সিলর

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

নগরভবন থেকে জোর করে নেওয়া ত্রাণের ১২৫ বস্তা চাল অবশেষে ফেরত দিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম লায়েক। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি চাল ফেরত দিয়ে আড়াই হাজার প্যাকেট ত্রাণ নিয়েছেন। নগরভবন থেকে জোর করে ত্রাণের চাল নিয়ে যাওয়া ও পরে ফেরত দেওয়া নিয়ে সিলেট নগরজুড়ে চলছে তোলপাড়। জানা যায়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অসহায়দের সহযোগিতা করার জন্য মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নগরভবনে ‘খাদ্য ফান্ড’ গঠন করেন। সেই ফান্ডে সরকারি-বেসরকারি অনুদানে জমা হওয়া খাদ্যসামগ্রী কাউন্সিলররা তাদের ওয়ার্ডে বিতরণ করছেন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এ কে লায়েক তার ওয়ার্ডের জন্য ছয় হাজার চারটি পরিবারের তালিকা জমা দেন সিটি করপোরেশনে। কিন্তু সেই তালিকা অবিশ্বাস্য ঠেকে মেয়র ও নগরভবনের কর্মকর্তাদের কাছে। তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ওই ওয়ার্ডে সাহায্যপ্রার্থী দুস্থ পরিবারের সংখ্যা এক হাজার ৫৪৫টি। তখন কাউন্সিলর লায়েককে তালিকা সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হলে তিনি ক্ষেপে যান। গত বৃহস্পতিবার তিনি নগরভবনে এসে এ নিয়ে মেয়র ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে ট্রাকভর্তি ১২৫ বস্তা চাল জোর করে নিয়ে যান। পরে চালগুলো উদ্ধারে তৎপর হয় সিটি করপোরেশন। কাউন্সিলর লায়েককে চাল ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এদিকে, খাদ্যসহায়তার ডাল, তেল, পিয়াজ, আলু ও লবণ না পেয়ে শুধু চাল নিয়ে বিপাকে পড়েন কাউন্সিলর লায়েক। অবশেষে নগরভবন কর্তৃপক্ষ ও কাউন্সিলর লায়েক সমঝোতায় পৌঁছান। চাল ফেরত দিলে আড়াই হাজার প্যাকেট খাদ্যসহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দেন মেয়র। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর এ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে শুক্রবার বিকালে চাল ফেরত দেন কাউন্সিলর লায়েক। আর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী লায়েককে বুঝিয়ে দেওয়া হয় আড়াই হাজার প্যাকেট খাদ্যসহায়তা (ত্রাণ)। এ ব্যাপারে কাউন্সিলর আবুল কালাম লায়েক বলেন, ‘নগরভবন থেকে তেল, ডাল, পিয়াজসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী না দেওয়ায় চাল ফেরত দিয়েছি। পরে নগরভবন থেকে প্যাকেটজাত ত্রাণ সরবরাহ করা হয়েছে।’

সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী জানান, ‘দাবি খাটিয়ে কাউন্সিলর লায়েক এক ট্রাক চাল নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।’

মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, ‘কাউন্সিলর লায়েক অসহায় পরিবারের যে তালিকা দিয়েছিলেন তা অবাস্তব ছিল। একটি ওয়ার্ডে ৬ হাজার অসহায় দুস্থ পরিবার এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাকে আড়াই হাজার প্যাকেট ত্রাণ দেওয়ার কথা বলায় তিনি জোর করে ১২৫ বস্তা চাল নিয়ে যান। পরে চাল ফেরত দিয়ে ওই আড়াই হাজার প্যাকেট নিয়ে গেছেন।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর