শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে টিকায় আস্থা মাস্কে অনীহা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে প্রতিদিনই মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে জেলা প্রশাসনের ১০-১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সকাল-বিকাল অভিযান পরিচলনা করছেন। তবুও অনেকের মধ্যে মাস্ক না পরার প্রবণতা লক্ষণীয়। পক্ষান্তরে প্রতিদিনই বাড়ছে টিকা গ্রহণের সংখ্যা। ফলে টিকা দেওয়ার কারণে অনেকের কাছে তৈরি হয়েছে আস্থা ও সাহস, চলাফেরায়ও রিল্যাক্স মনোভাব। মানছে না স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব। ফলে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। গত রবিবার এক দিনেই মারা যান ১১ জন। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, টিকায় আস্থা বৃদ্ধি এবং মাস্ক না পরার প্রবণতা বৃদ্ধির কারণেই কার্যত করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। অথচ দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার দুই সপ্তাহ পরই মানুষের শরীরে ইমুউনিটি তৈরি শুরু হয়। গত ৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া। এ হিসাবে ২১ এপ্রিলের পর থেকে ইমিউনিটি তৈরি হওয়ার কথা। কমিউনিটি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সূত্রে জানা যায়, চলমান কভিশিল্ড ভ্যাক্সিনের দুটি ডোজ। প্রথম ডোজ দেওয়ার সর্বোচ্চ তিন সপ্তাহ পর টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে ৭৬ শতাংশ মানুষের মধ্যে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি (ইমিউনিটি) তৈরি হয়। টিকা নেওয়ার পর প্রথম তিন সপ্তাহে যে কেউ এবং তিন সপ্তাহ পর ২৪ শতাংশ মানুষ কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হতে পারেন। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার আরও ৪ সপ্তাহ পর সর্বোচ্চ এক বছরের জন্য আরও শক্তিশালী ইমিউনিটি তৈরি হয়।

অর্থাৎ দুই ডোজ নেওয়ার পরও ১৮ শতাংশ মানুষ (১০০-৮২=১৮) কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে এই ১৮ শতাংশের কারণে বাকিরা নিরাপদ। কারণ ৮২ শতাংশ মানুষের ইমিউনিটি তৈরি হলে সেটা হয়ে যাবে হার্ড ইমিউনিটি, যা করোনা সংক্রমণের চেইন ভেঙে দেবে। 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. অজয় দেব বলেন, করোনার দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও মাস্ক পরতে হবে। কারণ টিকা দেওয়ার পরও যে ১৮ শতাংশের শরীরে ইমিউনিটি তৈরি হয়নি, আপনিও তাদের একজন হতে পারেন। তাছাড়া আপনার শরীরে ইমিউনিটির জন্য করোনা সুবিধা করতে না পেরে কিছুদিন দুর্বল হয়ে চুপচাপ ঘুমিয়ে থাকতে পারে। যে সময়ে ইমিউনিটিবিহীন কারও শরীরে তা প্রবেশ করতে পারে। তাই আমাদের টিকার ওপর আস্থা রাখতে হবে। সঙ্গে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। পৃথিবী থেকে করোনা পূর্ণাঙ্গরূপে বিদায়ের আগে কিংবা টার্গেট জনগোষ্ঠীর (৮০-৯০ শতাংশ) ইমিউনিটি অর্জন না করা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, টিকা নিলেও মাস্ক না পরার কোনো সুযোগ নেই। সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে, স্বাস্থ্যবিধিও মানতে হবে। অন্যথায় করোনা সংক্রমণ রোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক বলেন, মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রতিদিনই সকাল-বিকাল ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নগরে এলাকাভিত্তিক অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে জরিমানা, মাস্ক বিতরণ ও সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়। তবুও অনেকের মাঝে সতর্কতা দেখা যায় না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর