দেশে প্রথমবারের মতো মাত্র ২-৩ ইঞ্চি ফুটো করে MICS পদ্ধতিতে হার্টের ডাবল ভাল্ব প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেছেন একদল তরুণ চিকিৎসক। গত মঙ্গলবার হাসিনা বেগম নামে ৩০ বছর বয়সী এক নারীর দেহে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আশ্রাফুল হক সিয়ামের অধীনে এই সফল অস্ত্রোপচার করা হয়। এই অপারেশনে প্রায় ৮-১০ জন চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেন এবং ৪-৫ ঘণ্টায় তা সফলতার সঙ্গে শেষ হয়। এই ডাবল ভাল্ব অপারেশন হার্টের অত্যন্ত জটিল অপারেশন এবং এই MICS পদ্ধতিতে মাত্র ২-৩ ইঞ্চি ফুটো করে ভাল্ব প্রতিস্থাপন সারা বিশ্বেই অত্যন্ত বিরল।
ডা. সিয়াম বলেন, সারা বিশ্বে মাত্র কয়েকটি হাসপাতালে এই ধরনের আধুনিক পদ্ধতিতে এই অপারেশন হয়ে থাকে। আজ আমরাও সেই মাইলস্টোনে পা দিতে পেরেছি এবং দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পেরেছি। এখন আর বিদেশে নয়, বিদেশিরাই আমাদের দেশে হার্টের চিকিৎসা নিতে আসবে ইনশাআল্লাহ। সারা বিশ্বেই চিকিৎসা বিজ্ঞান এগিয়ে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট MICS পদ্ধতিতে সরকারিভাবে প্রথম হার্টের ফুটো অপারেশনের মাধ্যমে পথচলা শুরু করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে ও সহযোগিতায় আজ আমরা দেশে প্রথমবারের মতো MICS পদ্ধতিতে মাত্র ২-৩ ইঞ্চি ফুটো করে ডাবল ভাল্বের মতো জটিল অপারেশন করতে পেরেছি। তাই তার কাছে কৃতজ্ঞতা এবং দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই যেন এই দেশে ভবিষ্যতে হার্টের ট্রান্সপ্লান্ট শুরু করতে পারি। এই অপারেশনে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
কার্ডিয়াক সার্জনস সোসাইটি অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি অধ্যাপক ফারুক আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের প্রথম অপারেশনের জন্য ডা. সিয়ামকে অভিনন্দন জানাই।জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক মীর জামালউদ্দিন বলেন, এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে আমরা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে এই ধরনের কসমেটিক সার্জারি শুরু করতে পেরেছি। এই পদ্ধতিতে অপারেশনের সুবিধা হলো রোগীর রক্তক্ষরণ কম হয়, ব্যথা কম অনুভব হয় ও দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি যেতে পারেন।
তার এই অপারেশনে অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন অ্যানেস্থেটিকস্ হিসেবে অধ্যাপক ডা. শাহনাজ, সহকারী অধ্যাপক ডা. সালাম, সহকারী অধ্যাপক ডা. রোমেনা রহমান, ডা. আসিফ আহসান চৌধুরী, ডা. ইমরান, ডা. মন্জুর, ডা. ওয়াহিদা, ডা. রুবাইয়াত ও ডা. সৌরভ।