দুদকের করা মামলায় বহুল আলোচিত টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ দাশের স্ত্রী আত্মসমর্পণের পর জামিন আবেদন করলে, তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। গতকাল চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুনসি আবদুল মজিদ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন বলে জানান দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক। তিনি বলেন, শুরু থেকে পলাতক ছিলেন প্রদীপের স্ত্রী চুমকি। পরে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি। গতকাল আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করেন চুমকি। একই সঙ্গে জামিনের আবেদন করেন। দুদকের পক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে দেন। এই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের ধার্য দিন গতকাল চুমকির জামিন আবেদনের শুনানির পর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হওয়ার পর চুমকিকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের মামলায় প্রদীপসহ দুজনকে মৃতদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। গত ৩১ জানুয়ারি এই রায় দেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এদিকে, ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে মামলা করেন। গত বছরের ২৬ জুলাই দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পত্তি অর্জনের মামলায় প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে দুদক অভিযোগপত্র দেয়। একই বছরের ১৫ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। বর্তমানে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, নগরীর পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরের বাড়ি, ৪৫ ভরি সোনা, একটি করে কার ও মাইক্রোবাস, ব্যাংক হিসাব এবং কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাটের মালিক প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারণ। তার ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকার। তার ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়েছে দুদক। এ ছাড়া চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী দাবি করলেও এর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রদীপের ঘুষ, দুর্নীতির টাকায় তার স্ত্রী কোটিপতি হয়েছেন।
