রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে ১৭ হাজার প্রত্ন নিদর্শন আছে। এর মধ্যে মাত্র ১ হাজার ১০০টি নিদর্শন গ্যালারিতে রাখার ব্যবস্থা আছে। বাকিগুলোর প্রদর্শনের ব্যবস্থা নেই। রাখারও জায়গা নেই। বরেন্দ্র জাদুঘর সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন পরিচালিত এ জাদুঘরের ভিতরের বারান্দায় ৪৭টি প্রত্নবস্তু গ্যালারিতে প্রদর্শিত হচ্ছিল। বারান্দার দেয়ালে নোনা ধরার কারণে টাইলস লাগানো হচ্ছে। ৬ লাখ টাকার এই সংস্কার কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে করা হচ্ছে। এই কাজ করার জন্য প্রত্ন নিদর্শনগুলো বারান্দার গ্যালারি থেকে নামিয়ে নিচে রাখা হয়েছে। এগুলো মেঝেতে ফেলেই নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে। দেয়াল চটানোর সময় সব ধুলা প্রত্ন নিদর্শনের গায়ে পড়ছিল। এ অবস্থায় কেউ একজন ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। জাদুঘরের পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, প্রত্ন নিদর্শনগুলো সরিয়ে অন্য কোথাও রাখার জায়গা নেই। এছাড়া একেকটি মূর্তির অনেক ওজন। এগুলো সরাতে গেলে যদি এর কোনো একটি কারুকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেটি আর ফেরত পাওয়া যাবে না। যেগুলো সহজে সরানো যায়, সেগুলো বারান্দা থেকে নিয়ে তারা সিঁড়ির নিচে রেখে দিয়েছেন। সংস্কার কাজ শেষ হলে আবার প্রতিস্থাপন করবেন। ১৭ হাজার প্রত্নবস্তু গ্যালারিতে রাখতে হলে এ রকম আরও একটি জাদুঘর লাগবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রাজশাহী জেলার সভাপতি আহমদ সফিউদ্দিন বলেন, অতীতে দেখা গেছে, এ ধরনের সংস্কার কাজ করার সময় জাদুঘরের সংশ্লিষ্ট গ্যালারি দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। এর নানামুখী প্রতিক্রিয়া আছে। অন্যদিকে ভারী মূর্তিগুলো সরানোও সহজ নয়। এগুলো সরাতে গেলে যদি কোনো ক্ষতি হয়, সেটা অপূরণীয় ক্ষতি হবে। কারণ, টাকা দিয়ে এর মূল্য নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। এগুলো অমূল্য সম্পদ। তাই যত্নসহকারে মোটা চট দিয়ে ঢেকে রেখে সংস্কার কাজ করা উচিত। তা ছাড়া দেয়াল চটানোর সময় ইট-পাথরের টুকরা পড়েও এর ক্ষতি হতে পারে। সাবধানতার সঙ্গে কাজ করা দরকার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম জানান, বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরটির সংস্কার কাজ চলছে।
গ্যালারির সংখ্যা বাড়বে। এরপর দর্শনার্থী ও গবেষকরা যখন আসবেন, তখন তারা আরও ভালোভাবে সব প্রত্নতত্ত্বগুলো দেখতে পারবেন।
