‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নগরের প্রধান সেবা সংস্থা। শহরের যে কোনো সমস্যা-সংকটে চসিককেই প্রথম এগিয়ে আসতে হয়। তদুপরি চসিক নাগরিকদের প্রতি দায়বদ্ধ। নাগরিকরাও চসিকের কাছে বেশি সেবা প্রত্যাশা করে। চসিকের ওপর বেশি আস্থা রাখেন। আমরাও নাগরিকদের যে কোনো কাজ দ্রুত সমাধান করতে চেষ্টা করি। আবার প্রতিটি কাজের বিষয়ে জবাবদিহিতা থাকে। তাই চসিকের প্রতিটি কাজই চ্যালেঞ্জের। নগরবাসীর সহযোগিতায় আমরা প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে জয় করার চেষ্টা করি।’ চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন গতকাল বিকালে নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। গত শুক্রবার রাতে হিজড়া খালে পড়ে শিশু মৃত্যুর পর নগরের প্রধান সেবা সংস্থাটি নিয়ে নগরজুড়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে। তাছাড়া চসিক মেয়র পেতে যাচ্ছেন প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা। ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, এখন আমার প্রধান চ্যালেঞ্জ ডেঙ্গু প্রতিরোধ এবং জলাবদ্ধতাকে সহনীয় পর্যায়ে আনা। সামনে বর্ষা মৌসুম। তখন ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। এর জন্য আমরা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। যেমন হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হাসপাতাল ঘোষণা, বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, ১০ শয্যার একটি ইউনিট চালু এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এবার ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সঙ্গে মশক নিধন কাজও জোরালো করা হয়েছে। তবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অবশ্যই সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। চসিক মেয়র আরও বলেন, সামনের সময়ে আরেক চ্যালেঞ্জ জলাবদ্ধতা। বলা যায়, এটি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া একটা সমস্যা। তবে অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার জলাবদ্ধতা নিরসনে সবগুলো সেবা সংস্থার সমন্বয়ে বেশি কাজ চলছে। এরই মধ্যে আমরা একাধিকবার সমন্বয় সভাও করেছি। বিষয়টা নিয়ে সিডিএ, বন্দর, ওয়াসা, সিএমপি ও রেলসহ সব সংস্থাই আন্তরিক। আমরা মনে করি, আগামী বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হবে। তবে এটি একেবারে নিরসন হওয়ার মতো বিষয় নয়। তিনি বলেন, খালে পড়ে ছয় মাস বয়সি একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এটি অবশ্যই মর্মান্তিক। মানার মতো বিষয় নয়। ঘটনার পর থেকেই আমরা কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে নগরের উন্মুক্ত খাল-নালার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। আজ-কালের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত হবে। এরপরই আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। আমরা আর কোনো লাশ চাই না। ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চসিক পরিচালনায় অর্থ একটি বড় বিষয়। তাই আমরা রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির জন্য নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।
সবার সম্মতিতে সহনীয় পর্যায়ে কর আদায় করা হচ্ছে। চসিকের মালিকাধীন মার্কেটগুলোকে আরও আয়বর্ধক খাত হিসাবে সাজানো হচ্ছে। বছরের পর বছর নামমাত্র মূল্যে ভাড়া দিয়ে চলে আসা মার্কেটগুলো নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমরা বসেছি। তারাও ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছেন।