খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও প্রোভিসি শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা বিশ^বিদ্যালয়ে নিজ বিভাগের শিক্ষকতায় ফিরে যাবেন। শুক্রবার রাতে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম কাসেম স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়। কুয়েটের বিশ^বিদ্যালয় আইন, ২০০৩ এর ধারা ১২ (২) অনুযায়ী ভিসি প্রোভিসি পদ থেকে তাদের অব্যাহতি দিয়ে নিজ বিভাগে প্রত্যাবর্তনের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তবে উ™ূ¢ত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য এখনো কাউকে নতুন ভিসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এদিকে ভিসি, প্রোভিসির অব্যাহতির খবরে স্বস্তি ফেরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে। একই সঙ্গে শিক্ষক-কর্মচারীরাও ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতার কথা জানান। তবে সব ক্ষেত্রে আস্থা ফেরানোকেই এখন বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ছাত্র হলে থাকা শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা যে রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবি করেছিলাম সেখানে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। এখন আমরা চাই দলীয়করণের বাইরে নতুন একজন ভিসি নিয়োগ দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে ২২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বহিরাগত এক ব্যক্তি মামলা দিয়েছে তা প্রত্যাহার করা ও দ্রুত একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে হবে। এ ছাড়া আন্দোলনের কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে সেই সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানোকে প্রাধান্য দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে শিক্ষকদের কাছে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
একইভাবে শিক্ষক সমিতির নেতারাও মনে করছেন, আস্থার জায়গাটা নিয়ে কাজ করতে হবে। তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা থেকে আমরা বের হতে চাই। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশটা নিশ্চিত করতে চাই। কুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ড. আবু জাকির মোর্শেদ ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, ‘আমি কুয়েটের একজন সাধারণ শিক্ষক। কোনো পক্ষের নই। আমার একটাই পক্ষ-কুয়েট। সব সংকট, বাধাবিপত্তি কাটিয়ে আবার জেগে উঠুক প্রাণের কুয়েট- এটাই ঐকান্তিক চাওয়া।’
প্রসঙ্গত, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি হামলার ঘটনায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে ২১ এপ্রিল বিকালে ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন ৩২ জন শিক্ষার্থী। পরে শুক্রবার রাতে ভিসি ও প্রোভিসিকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।