বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ প্রতিনিয়ত ভারতীয় নাগরিক ও রোহিঙ্গাদেরও পুশইন করছে। এমন পুশইনের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। গতকাল চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে বিজিবির ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন দাবি করেন। বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বিভিন্ন সীমান্তে প্রতিনিয়ত পুশইন হচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও জানানো হয়েছে। ভারতীয় নাগরিক ও রোহিঙ্গাদেরও জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। শুরু থেকে আমরা এর কড়া প্রতিবাদ করে আসছি। এমন পুশইনের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে।
জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো প্রস্তুতি বা নির্দেশনা রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, সীমান্তের ৮ কিলোমিটার এলাকায় ভোট কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু ভোট গ্রহণে বিজিবি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন কিংবা সরকার যে দায়িত্ব দেবে সেটা আমরা পালন করব। ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় কিংবা জনজীবনের নিরাপত্তার হানি ঘটে এ ক্ষেত্রে বিজিবিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত সব বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সবাইকে নিয়ে গতকাল (বুধবার) মিটিং করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মিটিংয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার সুদীর্ঘ সীমান্ত সুরক্ষাসহ সীমান্ত ভূমি ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, মাদক ও অস্ত্রসহ অন্যান্য অবৈধ পণ্যের চোরাচালান প্রতিরোধ, নারী ও শিশু পাচার রোধসহ যেকোনো ধরনের আন্তসীমান্ত অপরাধ দমনে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে বিজিবি। শুধু তাই নয়, দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার ক্ষেত্রেও বিজিবি অত্যন্ত বিশ্বস্ততা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হচ্ছে।
এরআগে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নবীন সৈনিকদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। এ সময় বিজিটিসিএন্ডসির কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গাজী নাহিদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। ভাষণ শেষে বিজিবি মহাপরিচালক ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের সেরা চৌকস রিক্রুট হিসেবে বক্ষ নম্বর-৫৭৪ সাইফ মিয়া এবং অন্যান্য বিষয়ে সেরা সৈনিকদের হাতে তাদের সফলতার জন্য ক্রেস্ট তুলে দেন। এরপর নবীন সৈনিকদের চৌকসদল বিজিবি মহাপরিচালককে সশস্ত্র সালাম প্রদানের মাধ্যমে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।