‘আমাদের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। এর জন্য দরকার কার্যকর গণতন্ত্র। এ মুহূর্তে আমাদের রাজনীতি ও নির্বাচন অঙ্গন পরিষ্কার করতে হবে।’ গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ’ শীর্ষক ধারাবাহিক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘নিরাপত্তা, দুর্নীতি ও জ্বালানি’ শীর্ষক এ সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
সংলাপে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আইন করা হয় দুর্নীতি থামানোর জন্য। কিন্তু এ দেশে আইন ও নীতি নির্ধারণের মাধ্যমে দুর্নীতি করা হয়েছে। আমরা জ্বালানি খাতে দুর্নীতির কাঠামো ভেঙে দিয়েছি। চেষ্টা করছি আগামী সরকারের যেন পরিবর্তন আনতে সুবিধা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতির বিষয়ে আমরা আমাদের কাজে সন্তুষ্ট নই। একটি বড় সমস্যা হলো, অনেকেই চান দুর্নীতি থাকুক, যাতে তারা এর থেকে সুবিধা নিতে পারেন।’ নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘দুর্নীতির মূল চালিকাশক্তি হলো টাকা। আমাদের টাকার খেলা বন্ধ করতে হবে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘ইনডেমনিটি আইন দ্বারা জ্বালানি খাতে দুর্নীতি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এলএনজি খাতে দুর্নীতির মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।’ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান বলেন, ‘পানি নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশ ঝুঁকিতে আছে। পানি নিয়ে যে সমস্যা আছে তা সমাধান করা না হলে আমরা সমস্যায় পড়ব।’ এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘আমাদের থ্রেট অনেক বেশি। এগুলো একে অন্যের সঙ্গে জড়িত; আলাদা নয়। আমরা ২২টা সমস্যা চিহ্নিত করেছি। এগুলো সমাধান করলে আমাদের উন্নতি হবে।’ সাবেক কূটনীতিক এম শফিউল্লাহ বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্ষমতা খর্ব করার চেষ্টা চলছে, যা দীর্ঘমেয়াদে খারাপ প্রভাব ফেলবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জাতীয় স্বার্থ নির্ণয় করতে হবে। দেশের স্বার্থের জন্য আমদের কাজ করতে হবে।’
সিজিএস সভাপতি জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় সংলাপে আরও বক্তব্য দেন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা ড. এম শামসুল আলম, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, গণঅধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক হাসান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়া সম্পাদক ফজলুল করীম মারুফ প্রমুখ।