বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে একে-অপরকে দোষারোপ করছে একাধিক ক্ষমতাধর রাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওসহ আমেরিকার শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তারা বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্য পরোক্ষভাবে বেইজিংকে দায়ী করার চেষ্টা করেছেন। তাদের কেউ কেউ এ ভাইরাসকে ‘চীনা ভাইরাস’ বা ‘উহান ভাইরাস’ বলেও অভিহিত করেছেন।
আবার চীন, ইরান ও রাশিয়ার সন্দেহের তীর যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। চীনের ভেতর সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষজন হরদমসে লিখছে এবং শেয়ার করছে যে, চীনকে শায়েস্তা করতে যুক্তরাষ্ট্র জীবাণু অস্ত্র হিসাবে চীনে এই ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়ে গেছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের অভিযোগ, রাশিয়ার সঙ্গে সংযোগ রয়েছে এমন অ্যাকাউন্ট থেকেও এমন গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র এ ভাইরাস ছড়িয়েছে।
এ নিয়ে সম্প্রতি মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন এক বিশ্লেষণধর্মী লেখায় দাবি করেছে, বিশ্বব্যাপী চলমান এই করোনাভাইরাসের সংকটকে কাজে লাগিয়ে এখন ফায়দা নিতে চাচ্ছে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনিপং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লামিদির পুতিন। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার জায়গা থেকে পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে লড়াই করে যাচ্ছেন। তিনি করোনার প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতি ও আমেরিকার প্রতিবন্ধকতা নিয়েও কাজ করছেন। ট্রাম্প বৈশ্বিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
অন্যদিকে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্প্রতি এই ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান সফর করে পেছনের ঘটনা চেপে গিয়ে চীনাদের আত্মবিশ্বাসের কথা বলেছেন। সিএনএন এর ঐ বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, গোট বিশ্ব যখন করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে স্তব্ধ তখন চীনের প্রেসিডেন্ট সুযোগের সন্ধানে রয়েছেন। এই পরিস্থিতি সবকিছুতেই নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন। তিনি চীনের অর্থনীতি, দেশীয় রাজনীতিতে তার নেতৃত্ব ও বিশ্বমঞ্চে নিজের অবস্থান নিয়েই ভাবছেন।
একই পথে হাঁটছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লামিদির পুতিনও। তিনিও এই করোনা সংকটকে কাজে লাগিয়ে ফায়দা লুটতে চাইছেন। সম্প্রতি তেলের বাজারে যে ধস নেমেছে তার পেছনেও তার হাত রয়েছে। তিনি মূলত ক্ষমতার নেশায় তার কয়েক বছরের পুরোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে হাঁটছেন। উল্লেখ্য, মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ৮৯৭ জনে পৌঁছে। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ২ লাখ ৮৭ হাজারেরও বেশি। মোট সুস্থ হয়েছেন ৯০ হাজারেরও বেশি। চীনের পর এবার ইরানেও আক্রান্তের সংখ্যা ও নিহতের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক