কভিড-১৯ করোনাভাইরাসে ৩ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১২ হাজার ৯৪৪ জনের। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই ছড়িয়েছে এ ভাইরাস। এক অন্ধকার সময়ও পার করছে পৃথিবী। তবে এত সব নেতিবাচক খবরের ভিড়ে ইতিবাচক একটি ফিচার প্রকাশ করেছে বিবিসি অনলাইন। করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব কীভাবে উপকৃত হয়েছে তা নিয়ে বিস্তারিত লেখা হয়েছে তাতে:
১. দূষণমুক্ত হচ্ছে পৃথিবী
করোনাভাইরাসের কারণে মানুষ এখন ঘরবন্দি। লকডাউন হয়ে গেছে বহু শহর ও দেশ, শিল্পকারখানা, গাড়ি চলাচল সীমিত, অনেক ক্ষেত্রে বন্ধ। এর ফলে দূষণের স্তর উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। শিল্প উদ্যোগ এবং যানবাহন চলাচল সীমিত হওয়ার ফলে চীন ও উত্তর ইতালিতে মারাত্মক বায়ু দূষণকারী ও রাসায়নিক বিক্রিয়া তৈরি করা নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ কমে গেছে। করোনা ভাইরাসের ফলাফলের মধ্যে দেখা যাচ্ছে, কার্বন মনোক্সাইড প্রধানত গত বছরের তুলনায় ৫০% হ্রাস পেয়েছে। যানবাহনের ধোয়া থেকেই মূলত তা বেশিরভাগ নির্গত হয়। তাছাড়া অসংখ্যা ফ্লাইট বাতিল ও কয়েক মিলিয়ন কর্মকর্তা নিজ ঘরে বসেই কাজ করছে। এতে করে কমেছে বায়ু দূষণের পরিমাণ।
২. স্বরূপে ফিরছে ঐতিহ্যবাহী খালগুলো
করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী খালগুলো পরিচ্ছন্ন ও উন্মুক্ত হচ্ছে। পানির মানও বাড়ছে। উত্তর ইতালির জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রের পানিরপ্রবাহগুলোতে পলির স্তর জমেছিলো। ইদানিং সেসব নোংরা জল এতোই পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, সেখানে মাছ চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
৩. উদারনৈতিক মনোভাব সৃষ্টি
করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার মধ্যেই মানুষের হৃদয়ে জন্ম নিচ্ছে উদারতা, সহানুভূতি এবং দয়া। করুণ এই সময়ে মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে। এমন বহু গল্প এখানে উঠে এসেছে। যেমন প্রবীণ ও দুর্বল লোকদের জন্য আসবাব ও ঔষুধপত্র সরবরাহ করার জন্য ৭২ ঘণ্টায় সাড়া পাওয়া গেছে ১ হাজার ৩০০ স্বেচ্ছাসেবীর। মানুষের পাশে দাঁড়াতে মানুষ এভাবে স্বেচ্ছায় দল গঠন করে এগিয়ে আসছে। এভাবেই মানুষের জন্য মানুষের মাঝে উদারনৈতিক মনোভাব জন্ম হচ্ছে।
৪. তৈরি করছে মানসিক ঐক্য
করোনাভাইরাস বাহ্যিকভাবে মানুষকে মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিলেও, আদতে তাতে মানুষ মানুষকে ভিন্নভাবে অনুভব করার সুযোগ পাচ্ছে। সাধারণত কাজের ব্যস্ততার মাঝে আমরা বাড়ির লোকজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি, বন্ধু-বান্ধবের মাঝে তৈরি হয় দূরত্ব। করোনা ভাইরাসের কারণে লোকজনকে বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। এতে করে বিশ্বের সম্প্রদায় চলে আসছে মানসিকভাবে কাছাকাছি। পরিবারগুলোর বন্ধন সুদৃঢ় করছে।
৫. বাড়ছে সৃজনশীলতা
যখন সারা বিশ্বে মিলিয়ন সংখ্যক মানুষ পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন এবং ঘরবন্দি, তখন অনেকে এই সুযোগ নিচ্ছে সৃজনশীল কোনো কাজের উদ্যোগের, মনোযোগ রাখছেন নতুন কিছু সৃষ্টিতে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি অবজারভেটরি ঘরে আটকা থাকা লোকদের জন্য রাতের আকাশে ভ্রমণ করার প্রস্তাব পযন্ত দিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা