করোনাভাইরাসে বিশ্বে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৭ লাখ ২১ হাজার মানুষ। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার মানুষের। চীনের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বের ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস।
করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে বিভিন্ন পোস্ট ও ভিডিও। করোনা ঠেকাতে একগুচ্ছ পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। কিন্তু সত্যিই সত্যিই কতটা জানি আমরা এই ভাইরাস নিয়ে?
এই ভাইরাস কীভাবে মানুষের মধ্যে এল, এর বৈশিষ্ট্য কী, এর প্রতিষেধক কীভাবে আবিষ্কার করা যায়-- তা নিয়ে সারা পৃথিবীতে গবেষণা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
বাস্তবে কতটা প্রাণঘাতী এই ভাইরাস?
যতক্ষণ না পুরো বিশ্বে এই ভাইরাসের প্রকোপ কমছে এবং কত মানুষের এতে মৃত্যু হয়েছে তা জানা যাবে, ততক্ষণ এর প্রকোপ কতটা মারাত্মক তা বোঝা মুশকিল। সেক্ষেত্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যুর হার সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া অসম্ভব। এই মুহূর্তে অনুমান করা হয় যে ভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় ১ শতাংশ লোক মারা যায়। তবে এমন অনেক রোগী রয়েছেন তাঁরা নিজেরাও জানেন না তারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত। সেই হিসাব জানা গেলে সব রিপোর্ট বদলে যাবে।
রোগের লক্ষণ নিয়ে ধোঁয়াশা
জ্বর দিয়ে ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়, এরপরে শুকনো কাশি দেখা দিতে পারে। প্রায় এক সপ্তাহ পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। তার পর কিছুক্ষেত্রে গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা এবং ডায়রিয়ার খবর পাওয়া গেছে। এমন উপসর্গ দেখে রোগীকে হাসপাতালে ভরতি করে চিকিৎসা শুরু করতে হয়।
তবে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল হালকা, ঠান্ডা জাতীয় লক্ষণ যেমন সর্বাধিক সর্দি, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি দেওয়া কিছু রোগীদের মধ্যে এমন উপসর্গ দেখা যায়। গবেষণাগুলো পরামর্শ দিয়েছে, যদি এমন রোগী থাকে তাহলে একটা সম্ভবনা থাকে এদের মধ্যে হয়তো কেউ এই ভাইরাসটি বহন করছেন, কিন্তু তাঁর শরীরে অ্যান্টিবডি থাকায় হয়তো ওই ব্যক্তি নিজে আক্রান্ত না হলেও অন্যকে সংক্রামিত করছেন।
শিশুরা কতটা নিরাপদ? শিশুরা কি আক্রান্ত হয়?
শিশুরা অবশ্যই করোনভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। তবে শিশুদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হালকা লক্ষণ দেখা দেয় এবং অন্যান্য বয়সের তুলনায় শিশুদের তুলনামূলকভাবে মৃত্যুর হার কম। তবে কোনও শিশু যদি স্কুল অথবা খেলার মাঠে খেলতে যায় এমনকী সংক্রামণ আছে এমন ব্যক্তির কাছাকাছি থাকে তাহলে শিশুটি আক্রান্ত হতে পারে।
কারও কারও ক্ষেত্রে এটা মারাত্মক হয়ে যায়
কোভিড -১৯ বেশিরভাগের জন্য একটি হালকা সংক্রমণ। তবে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষের কাছে ভাইরাসটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। যদি কোনও ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে এবং জিনগত কোনও পরিবর্তনের ফলে ভাইরাসটি অনেকসময় মারাত্মক হয়ে যায়।
করোনাভাইরাসকে কাবু করা তেমন কোনও প্রতিষেধক বা ওষুধ নেই বলে, এই ভাইরাস ঠেকাতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর অনেরকটা ভরসা করতে হবে আপাতত।
কত দিন লাগে বুঝতে যে সংক্রমণ হয়েছে?
বিজ্ঞানীর খুঁজে চলেছেন কত জনের মৃদু উপসর্গ হয় বা একেবারেই হয় না, অথচ তারা রোগ ছড়াতে পারেন। মোটামুটি একটা হিসাব থেকে জানা গিয়েছে, এদের মধ্যে ৫০ শতাংশ মানুষ সংক্রমণ ছড়াতে পারেন। সংক্রমণ হওয়ার পর উপসর্গ দেখা দিতে মোটামুটি ২-১৪ দিন সময় লাগে, যাকে বলে ভাইরাসের ইনকিউবেশন পিরিয়ড। একটি সমীক্ষা জানাচ্ছে, গড়ে পাঁচ দিনের মধ্যেই উপসর্গ প্রকাশ পায়।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ