চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক )হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নেয় প্রায় ছয় হাজার রোগী। কিন্তু করোনাভাইরাস প্রকোপের পর থেকে হাসপাতালের বহির্বিভাগ চলছে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২ পর্যন্ত। ফলে রোগীরা বহির্বিভাগ থেকে সেবা নিতে পারছে না। তাছাড়া বর্তমানে বন্ধ আছে অধিকাংশ প্রাইভেট চিকিৎসকের চেম্বার।
তবে চমেক হাসাপাতাল সাধারণ রোগীদের জন্য গত রবিবার রাত থেকে টেলিমেডিসিন সেবা চালু করেছে। এর মাধ্যমে মোবাইলে হটলাইনে ফোন করে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসাবিষয়ক পরামর্শ পাওয়া যাবে। অন্যদিকে, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের যাতায়াতে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার বিআরটিসির তিনটি স্কুলবাসে যাতায়াত করবেন চমেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা। সোমবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বাসগুলো বুঝিয়ে দেয়।
জানা যায়, বর্তমানে চলছে নিয়ন্ত্রিত চলাফেরা। গণপরিবহন বন্ধ থাকা ও বেশিরভাগ মানুষ স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে থাকায় সাধারণ রোগীরা হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছেন না। আবার চট্টগ্রামের সিংহভাগ চিকিৎসকের প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ। এমন অবস্থায় সাধারণ ও স্বাভাবিক রোগে আক্রান্ত রোগীরা প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। গতকাল দুপুরে চমেক হাসপাতাল থেকে ফেরত যাওয়া রোগী ফয়াসল বলেন, ‘আসতে বিলম্ব হয়। কিন্তু এসে দেখি বহির্বিভাগ বন্ধ। তাই এখন দুশ্চিন্তায় পড়ছি।’
তবে চমেক হাসপাতালের টেলিমেডিসিন সেবা এ ব্যাপারে বিশেষ ভুমিকা রাখবে বলে জানায়। ০১৮১৮৯৯২৬৫৭ ও ০১৯৪০২৩৩০৭৯ মোবাইলে সার্বক্ষণিক টেলিসেবা মিলবে। ২৪ ঘণ্টা দুটি মোবাইল নম্বরে কল করে চিকিৎসা সংক্রান্ত সব ধরনের পরামর্শ নিতে পারবেন সেবাপ্রার্থীরা।
চমেক হাসপাতালের উপপরিচালকল ডা. আফতাবুল ইসলাম বলেন, ‘গত রবিবার থেকে দুটি মোবাইলের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন চালু হয়েছে। দুটি মোবাইল নম্বরে ফোন আসলে প্রথমে অপারেটর প্রয়োজনীয় তথ্যসহায়তা দেবেন, পরে প্রয়োজনসাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসককে কলটি ফরোয়ার্ড করবেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসক-মেডিকেল অফিসার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলে প্রায় ৫০০ জন আছেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন তাদের যাতায়াতে গতকাল থেকে তিনটি বাস বরাদ্দ দিয়েছে। তাছাড়া আমাদের কিছু অ্যাম্বুলেন্সও আছে। এসব যানবাহন চিকিৎসক-নার্সদের পরিবহন করবে।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার মাসুদুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীর স্কুল শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মোট ১০টি বাস উপহার দিয়েছিলেন। গত ২৬ জানুয়ারি দ্বিতল স্কুলবাসগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত হয়। এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তাই এ মুহুর্তে অতি প্রয়োজনে চিকিৎসক ও নার্সদের পরিবহনে জেলা প্রশাসক মহোদয় বাসগুলো হাসপাতালকে ব্যবহারের জন্য দিয়েছেন। এর মাধ্যমে করোনাভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবাকর্মীদের যাতায়াতের ভোগান্তিটা কমবে।’
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার