উহান ছিল করোনাভাইরাসের গ্রাউন্ড জিরো (উৎপত্তিস্থল)। চীনের এই নগরী হয়ে উঠেছিল করোনাভাইরাসের প্রতীক। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি চীনের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল উহান। করোনাভাইরাসকে রুখতে কড়া লকডাউন চালু হলেও তা থামানো যায়নি। অবশেষে লকডাউন উঠেছে সেখানে। চীনের মোট ৪ হাজার ৬৩৪টি করোনাজনিত মৃত্যুর মোট ৩ হাজার ৯০০টিই হয়েছে উহানে।
স্থানীয় মানুষ আস্তে আস্তে ফিরছে স্বাভাবিক জীবনে। রাতের উহান আবার ফিরছে পুরোনো মেজাজে। ১ কোটি ১০ লাখ মানুষের শহর উহানে ১০ মে’র পর থেকে কোনো নতুন করোনা সংক্রমণ দেখা যায়নি। তাই স্বাভাবিকতায় ফিরতে উহানবাসীর কোনো আপত্তি নেই।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা যায় এক নারীকে, যিনি পানশালায় একটি জন্মদিনের পার্টিতে অংশ নিতে এসেছেন। তিনি ব্যস্ত তার গাল থেকে জন্মদিনের কেকের ক্রিম মুছতে। কিন্তু তার মুখে মাস্ক নেই। শুধু তারই নয়, মাস্কহীন অসংখ্য পার্টিমুখী জনতা ভিড় করছেন উহানের রাস্তায়।
সাত মাসের কঠোর লকডাউনের পর ঠিক আগের মতোই জন্মদিন বা অন্যান্য আনন্দের উদযাপনে ফিরছে মানুষ।
করোনার আগের সময়ের সাথে কোনো ফারাক দেখা যাচ্ছে না উহানের পানশালার। ভিড়ে ঠাসা শুধু এই পানশালাতেই নয়, উহানের তরুণ প্রজন্ম ভিড় জমাচ্ছে রাস্তার খাবার দোকানেও।
উহানের ‘নাইটলাইফ’-এর মূল ফ্যাক্টর এই অঞ্চলের বিশাল সংখ্যার শিক্ষার্থী, শিল্পী ও তরুণ কর্মী। সংগীতশিল্পী ওয়াং শিংহাও বুধবার উহানে একটি কনসার্টের আয়োজন করেন। প্রায় একশ দর্শকের ভিড় জমে তার কনসার্টে। গান গাওয়ার সময় গায়ের কোটও ছুঁড়ে দেন তিনি। মহামারিকালীন জীবন নিয়ে গান লিখছেন তিনি।
উহানের ‘বিয়ার হল’ পানশালায় আসা তরুণ ঝাং বলেন, ‘‘আমি এই সময়টা পুরো উপভোগ করতে চাই। কারণ, জীবন কখন থেমে যায়, তা কেউ বলতে পারে না।’’ কিন্তু এতটা আশাবাদী নন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও রেস্টুরেন্ট মালিকরা। সারা বছর লকডাউন তাদের যতটা আর্থিক ক্ষতি এনেছে, তা পুরোপুরি উসুল করতে এখনো বেশ খানিকটা সময় লাগবে, বলে তাদের মত।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ