নাটোরে করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় সর্ব মহলে উৎকণ্ঠা বেড়ে গেছে। করোনা সংক্রমনের হার গত এক সপ্তাহে ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩০ থেকে ৪৭ শতাংশে বেড়ে যাওয়ায় জনসাধারণের মাঝে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
দেশে করোনার সংক্রমণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসতেই ভারতের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বাড়তে শুরু করেছে এই ভাইরাসের সংক্রমণ। এরইমধ্যে সাত জেলাকে কঠোর নজরদারির মধ্যে রেখেছে সরকার। তার মধ্যে নাটোর একটি। সাম্প্রতিক সময়ে ওই জেলাগুলোতে করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
মানুষের উদাসীনতায় সংক্রমণের হার বাড়ছে বলে মনে করছেন জেলার করোনা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটিসহ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা। ফলে করোনার বর্তমান পরিস্থিতি প্রতিরোধসহ জনসচেতনতা বাড়াতে আবারও কঠোর অবস্থানে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ। স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানসহ জেলা পুলিশ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জনসচেতনতা বাড়াতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মাঠে নেমে আবারও মানুষের মাঝে মস্ক বিতরণ শুরু করছেন।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে হঠাৎ করে করোনা সংক্রমণের হার ৩০ থেকে ৪৬.৬২ শতাংশে বেড়ে যাওয়ায় মাঠে নামে জেলা প্রশাসনসহ জেলা পুলিশ। রবিবার জেলা প্রশাসনের দুইটি মোবাইল টিম শহরের কানাইখালী, নিচাবাজার ও স্টেশন বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ব্যবসায়ী সহ বেশ কয়েক ব্যক্তিকে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অপরদিকে, একই দিন দুপুর ১২টার দিকে শহরের কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ এলাকাসহ ট্রাফিক মোড় এলাকায় জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ ও পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা পথচারীদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেন।
জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী মিজানুর রহমান করোনা সংক্রমণের হার হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার নাটোরে সর্বাধিক ২৩ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হন। এদিন নাটোর ডিসি অফিসের সংস্থাপন শাখার অফিস সহকারী অপুর্ব কুমার পাইন (৫৭) করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এনিয়ে পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ১৭২৩ জন। মৃত্যু ২৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৪৭৩ জন। বর্তমানে নাটোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৬ জন।জনসচেতনতা বাড়াতে মানুষকে মাস্ক পড়ার জন্য বলা হচ্ছে । আক্রান্তদের হোম কোয়ারেন্টাইনে সহ সকলকে ঘরে থাকার জন্য বলা হচ্ছে। জনসচেতনতা বাড়াতে শহরে মাইকিং করা হচ্ছে।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, সংক্রমণ কমানোর জন্য মানুষকে সচেতন করতে যা যা করা প্রয়োজন তাই করা হবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, যে হারে মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে তা উদ্বেগজনক। মানুষকে ঘরে থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। সংক্রমিত এলাকায় না যাওয়ার পরামর্শ দেয়াসহ পথচারীদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। সচেতনতা বাড়ানোসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।
সংক্রমণ না কমা পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ