বাংলাদেশকে উদ্ভাবনের উচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভ (বিআইসি) আয়োজন করলো ‘বাংলাদেশ বিজনেস ইনোভেশন সামিট ২০১৯’। রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে এক জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে সামিটটি অনুষ্ঠিত হয়, যার আয়োজনে ছিলো বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম।
বাংলাদেশ বিজনেস ইনোভেশন সামিট এর মূল লক্ষ্য ছিল দেশীয় এবং বৈদেশিক উদ্ভাবনী ক্ষেত্রের সাফল্য এবং সৃজনশীলতার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোকপাত করা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সৃজনশীল উদ্ভাবনকে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে উদ্ভাবনী শক্তিকে উদ্দীপ্ত করে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিকাশের ক্ষেত্রে সামিটটি একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ বিজনেস ইনোভেশন সামিটে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বক্তারা তাদের বক্তব্য প্রদান করেন। সামিটে ছিলো ৩টি কি-নোট সেশন, ৩টি প্যানেল আলোচনা, ৪টি ইনসাইট সেশন, ১টি কেইস স্টাডি এবং ১টি স্টার্ট-আপ স্টোরি, যেখানে দেশের শীর্ষস্থানীয় উদ্ভাবন বিশেষজ্ঞ এবং কর্পোরেট কর্মকর্তারা তাদের মতামত তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের প্রতিষ্ঠাতা শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য লক্ষ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে উদ্ভাবনই একমাত্র পন্থা। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই প্রয়োজন উদ্ভাবনকে তাদের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে লালন করে ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে নিজ উন্নয়ন সাধন করা।’
সামিটের কি-নোট বক্তা হিসেবে ছিলেন এরিক সি ইম, দ্য হংকং পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ডিজাইন এর পাবলিক ডিজাইন বিভাগের ইনক্লুসিভ ডিজাইন ও চেয়ার প্রফেসর কিন ওয়াই মাইকেল সিউ; ইউনিসেফ নরওয়ের কর্পোরেট পার্টনারশিপ ও ইনোভেশন ডিরেক্টর আমের ফরিদ এবং ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড –এর নিউরোসার্জারি ও ম্যাথম্যাটিকস বিভাগের নিউরোকম্পিউটেশন প্রফেসর, ওয়াশিংটন ডিসি-র জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির ব্রেইন সায়েন্সেস প্রফেসর, ব্রেইন সায়েন্সেস ফাউন্ডেশন –এর চেয়ারম্যান এবং এমআইটি –এর মাইন্ড মেশিন প্রজেক্টের প্রতিষ্ঠাতা ড. নিউটন হাওয়ার্ড। প্যানেল আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল – কোম্পানির উদ্ভাবনব্যবস্থা রূপান্তরকরণ, প্রতিষ্ঠানে উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ার পরিচালনা এবং বাংলাদেশে উদ্ভাবনী ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সমষ্টিগত মডেল প্রণয়ন।
আলোচক হিসেবে ছিলেন ঢাকা ইউনিভার্সিটির আইবিএর-এর ডিরেক্টর প্রফেসর ড. সাঈদ ফারহাত আনোয়ার; ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও সাঈদ মাহবুবুর রাহমান; এটুআই –এর পলিসি অ্যাডভাইসর আনির চৌধুরী; এসিআই লজিস্টিকস লিমিটেড (স্বপ্ন) –এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সাব্বির হাসান নাসির; মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকা –এর প্রেসিডেন্ট ব্যরিস্টার নিহাদ কবির; বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি –এর এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম; ঢাকা ট্রিবিউন –এর এডিটর জাফর সোবহান; এসিআই –এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর আরিফ উদ দৌলা; রহিম আফরোজ রিনিউয়েবল এনার্জি –এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মনোয়ার মিসবাহ মঈন; ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড –এর মার্কেটিং ডিরেক্টর (হোম কেয়ার, ফুডস এন্ড রিফ্রেশমেন্ট) তানজিন ফেরদৌস; ইউনিসেফ নরওয়ের কর্পোরেট পার্টনারশিপ ও ইনোভেশন ডিরেক্টর আমের ফরিদ; এরিক সি ইম, দ্য হংকং পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ডিজাইন–এর পাবলিক ডিজাইন বিভাগের ইনক্লুসিভ ডিজাইন ও চেয়ার প্রফেসর কিন ওয়াই মাইকেল সিউ; বিকাশের চিফ এক্সটারনাল ও কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মেজর জেনারেল শেখ মো. মনিরুল ইসলাম (অব.), প্রাইম ব্যাংকের এক্সেকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন নাজমুল করিম চৌধুরি; ওয়ান ব্যাংকের এক্সেকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব এমএফএস অ্যান্ড এজেন্ট ব্যাংকিং গাজী ইয়ার মোহাম্মদ, গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এম মনিরুল আলম তপন এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি –এর ইসিই ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ড. এম রোকনুজ্জামান।
সামিট শেষে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশ বিজনেস ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯’ যার মূল লক্ষ্য ছিল এদেশের উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠিত সংস্থাগুলোর সাফল্য এবং সৃজনশীলতার উদ্দীপক হিসেবে কাজ করা। অ্যাওয়ার্ডটিতে ১০টি ক্যাটাগরিতে মোট ২৫০টি মনোনয়ন জমা পড়েছিলো। বিজয়ী এবং বিশেষ উল্লেখ্য- এই দু’টি ক্রমে পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিজয়ীদের নির্বাচন করার জন্য অনুষ্ঠিত অধিবেশনে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা মনোনয়নগুলো মূল্যায়ন করা হয়। পণ্য, সেবা কিংবা প্রক্রিয়া খাতে যেকোন ধরণের অগ্রগতি, তাদের নতুনত্ব, বাজারের চাহিদা, অর্থনৈতিক প্রভাব- এ কয়েকটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে মনোনয়নগুলো মূল্যায়ন করা হয়। এবারের ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড-এর প্রধান ক্যাটাগরিগুলো ছিলো ক্ষেত্র-ভিত্তিক যেখানে বিবেচিত হয়েছে আর্থিক খাত, পোশাক খাত, স্বাস্থ্যসেবা, এসডিজি অন্তর্ভুক্তকরণ, প্রক্রিয়া, পণ্য উন্নয়ন, স্টার্টআপ, সামাজিক ও প্রযুক্তি খাত।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক