জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এসইউব)-এর উদ্যোগে গতকাল রবিবার এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি।
আলোচনায় অংশ নেন বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খান ও স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর প্রো উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারারুল কবির। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর উপাচার্য অধ্যাপক এম. শাহজাহান মিনা।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ১৯৭২ সালে একটি সদ্যস্বাধীন নতুন দেশের অর্থনীতিকে বঙ্গবন্ধু এ দেশের খেটে-খাওয়া সাধারণ মানুষের প্রয়োজন ও প্রত্যাশার সাথে সঙ্গতি রেখে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।
আর তা করার লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন যেসব উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তার মধ্যে অন্যতম ছিল একটি শক্তিশালী পরিকল্পনা কমিশন গড়ে তোলা এবং সেখানে তিনি দেশের সবচেয়ে মেধাবী দেশপ্রেমিক মানুষদের নিয়োজিত করেছিলেন। যাতে তারা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নিম্নকণ্ঠের সাধারণ মানুষের স্বার্থকে সমুন্নত রাখতে সদা তাগিদ বোধ করেন।
কিন্তু ষড়যন্ত্রকারী ঘাতকেরা তা হতে দিতে চায়নি। আপনারা জানেন, ১৯৭৫-এর পর দীর্ঘদিন পরিকল্পনা কমিশনকে দুর্বল করে রাখা হয়েছিল। আমরা আবার এখন সেটিকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলছি এবং গণমুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর কাজের একটি অন্যতম অগ্রাধিকার ছিল প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সকল স্তরে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন করা। আর সে জন্যই তিনি ড. কুদরত-ই খুদার নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন, যার প্রতিটি সুপারিশই ছিল সাধারণ মানুষের স্বার্থের অনুগামী। এ কমিশন অভিন্ন ধারার শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের যে সুপারিশ করেছিল, সেটিই ছিল এ কমিশনের গণমুখীতার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খান তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বাংলা একাডেমিকে তিনি বাঙালি জাতির মননের প্রতীক হিসেব গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। তাঁর আত্মজীবনী মনোযোগ দিয়ে পড়লে বুঝা যায়, সাধারণ রাজনৈতিক কর্মী ও খেটে-খাওয়া সাধারণ মানুষের প্রতি ছিল তার অসীম মমতা। তিনি বাঙালি সংস্কৃতির মৌল চেতনাগুলোকে লালন করার জন্য সবসময় তাগিদ দিয়ে গেছেন।
অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল কবির তাঁর আলোচনায় উল্লেখ করেন যে, বঙ্গবন্ধুর অকাল অন্তর্ধান না ঘটলে বাংলাদেশ আজ আরও বহুদূর এগিয়ে যেত। তিনি বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাসের এক ক্ষণজন্মা মহামানব বলে উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক এম. শাহজাহান মিনা তাঁর সভাপতির ভাষণে বলেন, একটি বৈষম্য মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার যে চেতনা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সমগ্র জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সে চেতনাই ছিল বস্তুত তাঁর রাজনৈতিক চেতনা ও দর্শন। সে চেতনা ও দর্শনকে সামনে রেখেই আমাদের আজ এগিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর ব্যবসায় অধ্যয়ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন প্রভাষক উম্মে নূসরাত উর্মি।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর