সোমবার, ২২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

মানবকল্যাণ ট্রাস্টের ১১ প্রতিবন্ধীর চমক

এসএ আসাদ, পাবনা

চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষার ফলে চমক দেখিয়েছে পাবনার মানব কল্যাণ ট্রাস্টের ১১ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। শ্রুতি লেখকের সহায়তা নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছেন হারুনার রশীদ নামে এক ছাত্র। অন্য ১০ জন পেয়েছেন জিপিএ-৪। তাদের এই অভাবনীয় সাফল্যে উৎফুল্ল পাবনা মানব কল্যাণ ট্রাস্টের সংশ্লিষ্ট সবাই। ১১ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শ্রুতি লেখককের সহায়তায় পাবনার সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ ও শহীদ এম মনসুর আলী কলেজ কেন্দ্র থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। পাবনা মানব কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল হোসেন বলেন, ‘দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা সবাই দরিদ্র ঘরের সন্তান। অন্ধদের লেখাপড়ার জন্য প্রয়োজন ব্রেইল পদ্ধতি। দেশের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ সুযোগ নেই। তাদের পরীক্ষার জন্য দরকার শ্রুতি লেখকের। একজন শ্রুতি লেখককে সম্মানি দিতে হয় ৮-১০ হাজার টাকা। যেটা এ প্রতিবন্ধীদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। শিক্ষাবোর্ড থেকে শ্রুতি লেখকদের অনুমোদন, রেজিস্ট্রেশন জটিলতা এবং বিভিন্ন বোর্ডের ভিন্ন ভিন্ন নীতিমালার কারণে পদে পদে তাদের হয়রানির শিকার হতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘প্রায় ১০০ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পাবনার মানব কল্যাণ ট্রাস্টের আশ্রয়ে থেকে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করছে। এছাড়া এ প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪ জন পথশিশু প্রাথমিক শিক্ষা ও দুজন এমএ পড়াসহ ১৮৫ জন বিভিন্ন শ্রেণিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য দেশে উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় পাবনা মানব কল্যাণ ট্রাস্টে অন্ধ শিক্ষার্থীদের ঝোক একটু বেশি।’ জিপিএ-৫ পাওয়া হারুনার রশিদ বলেন, ‘পরিবারের কাছে সে অবহেলিত ছিল। তার ইচ্ছা উচ্চ শিক্ষা শেষে চাকরি করে পরিবার ও প্রতিবেশীদের সহায়তা করা। অন্ধরা যাতে পরিবারের বোঝা না হয়ে সহায়ক হতে পারে সে জন্য উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ জরুরি। এটাই তার জীবনের একমাত্র যুদ্ধ।’ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান আওয়াল কবির জয় বলেন, আবুল হোসেন স্যার পাবনা মানব কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদর শিক্ষা বিস্তারে যে ভূমিকা রাখছেন তা নজিরবিহীন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোখলেছুর রহমান জানান, আবুল হোসেন সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিকে শিক্ষিত করতে যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা প্রশংসনীয়।

সর্বশেষ খবর