মানিকগঞ্জে নৌকার হাটগুলোর মধ্যে ঘিওর হাট অন্যতম। প্রতি বুধবার ঘিওর সাপ্তাহিক হাট বসে। গত বুধবার ঈদের দিনও সকাল থেকেই নৌকা বেচাকেনা জমে ওঠে হাটে। পুরো হাটে ছিল নৌকার ছড়াছড়ি। এ হাটে অবশ্য প্রতিদিনই নৌকা বেচাকেনা হয়। পানি না বাড়ায় নৌকার চাহিদা বাড়েনি তার পরও ঘিওর হাটে প্রচুর নৌকা উঠেছে। গতকাল সরেজমিনে দেখা যায় ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা বেশি। বেচাকেনা কম হলেও সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতিতে মুখরিত ছিল। স্থানীয়রা জানান, শত বছরের ঐতিহ্য ঘিওর নৌকার হাট। ঘিওর সরকারি কলেজসংলগ্ন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ১০০ বছর ধরে নৌকা বেচাকেনা হচ্ছে। পাশের জেলা টাঙ্গাইলের নাগরপুর, ঢাকার সাভার ও সিরাজগঞ্জ থেকে নৌকা কেনাবেচা করতে লোকজন এ হাটে আসেন। মহাদেব সূত্রধর, নিপেন সূত্রধর, আলমগীরসহ অনেকেই বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদারা নৌকা তৈরি করে এ হাটে বিক্রি করতেন। আমরাও তাই করছি। তবে কয়েক দিন আগে নদীতে পানি বাড়ায় নৌকার চাহিদা ছিল।
পানি কমায় চাহিদা কমেছে সেই সঙ্গে কমেছে দাম।’ এ হাটে মূলত নৌকা বলতে ডিঙি বেচাকেনা হয়। প্রকারভেদে ৩ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত একেকটি ডিঙি বিক্রি হয়। সাধারণত মেহগনি, কড়ই, আম, চাম্বল, রেন্ট্রির কাঠ দিয়ে নৌকাগুলো তৈরি হয়। বিক্রেতারা জানান, অনেক জায়গায় পানি বাড়লেও মানিকগঞ্জে এখনো বর্ষা হয়নি। এ কারণে নৌকার বিক্রি কম। তবে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নৌকার চাহিদা বাড়বে। আবদুল হক ও পান্নু মিয়া বলেন, ‘আজ (গতকাল) নৌকার দাম একটু কম। গত হাটে যে নৌকা ৪ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে আজ তা ৩ হাজার। একটু কম দামে নৌকা কিনে তারা খুশি।’ ঘিওর হাটের ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, এ হাটে খাজনা বেশি। শতকারা ৫ টাকা। একটি নৌকা ৫ হাজার টাকায় কিনলে ২৫০ টাকা খাজনা দিতে হয়। এটা কমানো উচিত। ঘিওর হাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি মাকসুদুর রহমান মাসুম বলেন, ‘জেলার অন্য হাটের তুলনায় এ হাটে খাজনা কম। এমনিতেই নৌকা বিক্রি অনেক কমে গেছে তাই খাজনা কমানো সম্ভব নয়।’