শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বাগেরহাটে নিউমোনিয়ার প্রকোপ

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

বাগেরহাটে নিউমোনিয়ার প্রকোপ

বাগেরহাটের সরকারি হাসপাতালগুলোতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। শুধু সরকারি হাসপাতালে গত এক মাসে ১০ হাজারের অধিক শিশু নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে চিকিৎসা নিয়েছে। আর বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে ভর্তির পরিসংখ্যান মিলিয়ে নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে ইতিমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলোর আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছে আরও ২০ হাজারেরও বেশি শিশু। গত কয়েকদিনে বাগেরহাট সদর হাসপাতালসহ উপজেলা হাসপাতালের ধারণক্ষমতার তিন থেকে চারগুণ রোগী ভর্তি হয়েছে। শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংকটের কারণে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। জেলার ৯টি উপজেলায় গত এক মাস থেকে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে- এসব শিশুর অর্ধেকই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও বেসরকারি ক্লিনিক অ্যাসোসিয়েশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, মূলত ভাদ্র মাসের গুমোট গরম, হঠাৎ বৃষ্টির ঠান্ডাজনিত আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বাগেরহাট সদরসহ ৯টি উপজেলায় নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। প্রতিবছর আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শিশুরা নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হলেও হঠাৎ করে গত এক মাস আগ থেকে জেলাজুড়ে  নিউমোনিয়া বাড়তে শুরু করে। গত কয়েকদিনে বাগেরহাট সদর হাসপাতালসহ উপজেলা হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতার তিন থেকে চারগুণ রোগী ভর্তি হয়েছে। শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংকটের কারণে হাসপাতালের তিলধারণের ঠাঁই নেই। হঠাৎ আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা। বাগেরহাট সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ, ডা. শিহান মাহমুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে বেডের সংখ্যা ছিল ২৪টি। গত এক মাস থেকে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত কয়েকদিনে বাগেরহাট সদর হাসপাতালসহ ধারণ ক্ষমতার তিন থেকে চারগুন রোগী ভর্তি রয়েছেন। প্রতিদিনই আক্রান্ত শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংকটের কারণে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় চাপ সামাল দিতে মেঝে ও বারান্দায়ও রোগী ঠাঁই দিতে পারছি না।

এসব শিশুর অধ্যেকই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। বাগেরহাটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, গত এক মাসে শুধু বাগেরহাট সদর হাসপাতালে সাড়ে ৪ হাজার শিশু নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। এ সময়ে জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে ১০ হাজারের বেশি শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। জেলা সদরসহ                  উপজেলা হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যার চেয়ে আক্রান্তের সংখ্য কয়েকগুণ হলেও হাসপাতালে আসা সব আক্রান্ত শিশুকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

 অভিভাবকদের আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন জেলার এই শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর