রবিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরের খানসামায় পাকেরহাট ইনফিনিটি ক্লিনিক ও কনসালন্টেশন সেন্টার কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে এক প্রসূতির মৃত্যু ঘটেছে বলে দাবি করেছে রোগীর স্বজনরা। কর্তৃপক্ষের দাবি ক্লিনিকে অবহেলা হয়নি। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে গোপনে প্রসূতির পরিবারের সঙ্গে কর্তৃপক্ষ মীমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে বিষয়টি গত ২১ জানুয়ারি জানাজানি হয়। এদিকে, প্রসববেদনা শুরু হলে গোয়ালডিহি পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র থেকে রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার না করে কীভাবে বেসরকারি ক্লিনিকে রেফার করা হলো এ নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের খতিয়ে দেখা দরকার বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন।

  প্রসূতি রফিকা আক্তার (২০) খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামের ভাদুশাহ্পাড়ার নুরজামাল ইসলাম লালুর স্ত্রী।  জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামের ভাদুশাহ্পাড়ার নুরজামাল ইসলাম লালুর স্ত্রী রফিকা আক্তার (২০) এর প্রসববেদনা শুরু হলে প্রথমে গোয়ালডিহি পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যায়। পরে ওই কেন্দ্রের কর্মরত তাহেরী আক্তার প্রসূতির সমস্যা গুরুতর বলে ইনফিনিটি ক্লিনিকে ভর্তির পরামর্শ দেন ও ভর্তি করান। ক্লিনিকে ভর্তির পর রাতে চিকিৎসকের দেখা মেলে। পরে মধ্যরাতে ডা. জেড রহমান সুমন নিজে ওই প্রসূতির সিজার করে চলে যান। এরপর প্রসূতির বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা ও রক্তক্ষরণ শুরু হলে চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে প্রসূতিকে নার্স ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা প্রদান করেন। প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন হলে রাত ৪টার দিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে ছাড়পত্র ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাগজ না দিয়েই মাইক্রো ম্যানেজ করে দিয়ে দিনাজপুর এম. আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ জানুয়ারি সদ্য প্রসবকারী ছেলে সন্তানকে রেখে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়। এরপরেই বিষয়টি গোপনে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়। প্রসূতির স্বামী নুরজামান ইসলাম লালু বলেন, সিজারের পূর্বে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ কোনো সমস্যার কথা না বললেও সিজারের পর রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে দিনাজপুরে পাঠান।  ক্লিনিক পরিচালক ইমতিয়াজ হোসেন জানান, ঘটনাটি তেমন গুরুতর নয়? প্রসূতির আগে থেকেই নানা সমস্যা ছিল। তবে ক্লিনিকে জিন-ভূতের আছর থাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু কাম্য নয়। পাকেরহাট ইনফিনিটি ক্লিনিকসহ অনিবন্ধিত এসব ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ইতোমধ্যে অবহিত করা হয়েছে। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানে জিন-ভূতের আছর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও কুসংস্কার।

সর্বশেষ খবর