বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

উখিয়ায় সড়ক ও সেতু নির্মাণে শত বছরের ভোগান্তির অবসান

কক্সবাজার প্রতিনিধি

উখিয়ায় সড়ক ও সেতু নির্মাণে শত বছরের ভোগান্তির অবসান

কক্সবাজারের উখিয়ায় শত বছর আগের ব্রিটিশ আমলে কালা চাঁন সিকদার সড়ক নির্মাণ করা হলেও একটি ব্রিজের অভাবে পিছিয়ে ছিল এলাকার মানুষ। উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের ওই সড়কে রেজু খালের ওপর সেতু নির্মাণ গণমানুষের প্রাণের দাবি ছিল। অবশেষে সেই কাক্সিক্ষত ব্রিজ নির্মাণ করে যোগাযোগের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। এতে শত বছরের যোগাযোগ ভোগান্তির অবসান হয়েছে। পাশাপাশি কালা চাঁন সিকদার সড়কটিও গাইডওয়ালসহ পিচঢালা করা হয়েছে। এতে অন্তত ৩০ হাজার মানুষের স্বাভাবিক চলাচল সহজ হয়েছে। তথ্যমতে, এ সড়ক ও সেতু দিয়ে উখিয়া উপজেলার দরগাহবিল, দরগাপালং, টাইপালং, ডেইলপাড়া, হাতিমুড়া, লম্বাঘোনা, শৈলেরডেবা, ডিগলিয়াপালং, চাকবৈঠা, গয়ালমারা, আমতলী, ভালুকিয়া, পাতাবাড়ী, তুলাতুলি ও পার্বত্য ঘুমধুমসহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত ৩০ হাজার মানুষ চলাচল করছে। স্থানীয়রা জানান, উখিয়া বড়ুয়া সম্প্রদায়ের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী রামুর বড়ুয়া সম্প্রদায় ও বৌদ্ধ মন্দিরের যোগাযোগের জন্য শত বছর আগে ব্রিটিশ সরকার আমলে উখিয়ার বড়ুয়া সম্প্রদায়ের তৎকালীন এক জমিদার একটি কাঁচা সড়ক নির্মাণ করেন। যা ‘কালা চাঁন সিকদার’ সড়ক নামে পরিচিত। কালা চাঁন সিকদার সড়কটি নির্মাণের পর থেকে উন্নয়ন যেমন হয়নি তেমনি একটি ব্রিজের অভাবে ৩০ হাজার মানুষের চলাচলের ভোগান্তি ছিল। দরগা পালং ও টাই পালংয়ের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা রেজু খাল পারাপারে বাঁশের সাঁকোই ছিল একমাত্র ভরসা। উখিয়া উপজেলা শহরে যাতায়াতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করত শিক্ষার্থীসহ সবাই। ঘটত ছোটখাটো দুর্ঘটনা। যানবাহন পারাপার করতে না পারায় হেঁটে যাতায়াত করতে হতো। কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যসহ মালামাল পরিবহনেও কষ্টের সীমা ছিল না। অবশেষে সেই কাক্সিক্ষত ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি গাইডওয়ালসহ পিচঢালা টেকসই সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এতে অন্তত ৩০ হাজার মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ও মালামাল পরিবহন সহজ হয়েছে। এতে শত বছরের যোগাযোগ ভোগান্তির অবসান হয়েছে। ওই এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে বিদ্যালয় কাম দুর্যোগ আশ্রয়ণ কেন্দ্রও। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টি-সেক্টর প্রকল্পের (ইএমসিআরপি) আওতায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে এলজিইডি। একইভাবে ইএমসিআরপির আওতায় কক্সবাজারে ৩৩টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী প্রতিপদ দেওয়ান বলেন, বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী উখিয়া- টেকনাফের সীমিত সম্পদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এ সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংকের অনুদান সহায়তায় ‘ইএমসিআরপি’ প্রকল্প থেকে বিভিন্ন সেবা সুবিধাসহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ করেছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে উখিয়া-টেকনাফ উপজেলার স্থানীয় অধিবাসী ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ বিভিন্ন সামাজিকসেবা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা কার্যক্রম চলমান। এ প্রকল্পের আওতায় উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নে ওই কালা চাঁন সিকদার সড়ক ও আরসিসি গার্ডার সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে এ এলাকায় শত বছর পর যোগাযোগ ভোগান্তির অবসান হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর