ব্রিটিশ সরকারের আমলে স্থাপিত ঠাকুরগাঁওয়ের বিমানবন্দরটি চালু ছিল স্বাধীনতার পরেও। লোকসান দেখিয়ে ১৯৭৯ সালের দিকে এখানে বিমান ওঠানামা বন্ধ করে দেয় তৎকালীন সরকার। এর এক বছর পর পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় বিমানবন্দরটি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেও ৪৪ বছরে চালু হয়নি ঠাকুরগাঁওবাসীর বহুকাক্সিক্ষত বিমানবন্দরটি। আজও আশায় বুক বেঁধে আছেন তারা।
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলার শিবগঞ্জে ১৯৪০ সালে ৫৫০ একর জমিতে নির্মাণ করা হয় বিমানবন্দর। ব্রিটিশ সরকার তাদের দাপ্তরিক ও সামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য এটি প্রতিষ্ঠা করেছিল। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রানওয়ে। ১৯৭৭ সালে সংস্কার করা হয়। পরবর্তী সময়ে যাত্রীর সংখ্যা কমে যাওয়া এবং লোকসানের কারণে ১৯৭৯ সালে বিমানবন্দরটি বন্ধ হয়ে যায়। চার দশকের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকায় বিমানবন্দর এলাকা পরিণত হয়েছে ফসলের মাঠে। রানওয়ের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে খানাখন্দে ভরে গেছে। সেখানে চরানো হয় গবাদিপশু। নষ্ট হচ্ছে বিমানবন্দরের নানান সরঞ্জাম। স্থানীয়রা মাঠে করছেন চাষাবাদ। বিমানবন্দর চালু করার জন্য বারবার জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দিলেও তার আর বাস্তবায়ন হয়নি।
চলতি বছর পরিত্যক্ত বিমানবন্দরের জমি সংরক্ষণের জন্য সীমানাপ্রাচীর তৈরি করেছেন সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। দিয়েছেন একটি সাইনবোর্ডও। ফলে জেলাবাসী স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন এটি চালু হওয়ার। তারা বলছেন, উত্তরাঞ্চলের যাত্রী সেবার পাশাপাশি ঠাকুরগাঁওয়ের ব্যবসাবাণিজ্যের প্রসারসহ এলাকার উন্নয়নের দ্রুত বিমানবন্দরটি চালু করা জরুরি। জেলা শহরের রফিকুল ইসলাম রোহান, আবদুল্লাহ আল সুমন, নাহিদ রেজাসহ কয়েকজন বলেন, আমরা প্রতিটি সরকারের সময় দেখেছি এমপি-মন্ত্রীরা আসেন, আশ্বাস দেন কিন্তু এখনো বিমানবন্দরটি চালু হলো না। এবার দেখলাম বিমানবন্দরের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেছেন সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। এতে আমাদের মনে একটু হলেও আশার সঞ্চার হয়েছে। এটি চালু হলে ব্যবসাবাণিজ্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হবে আমাদের জেলায়। ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলছেন, জেলাবাসীর দাবি এবং বিমানবন্দর চালুর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।