মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট পৌর বাজারের শামীম জুয়েলার্সে শুক্রবার সন্ধ্যায় (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। মাগরিবের নামাজ চলাকালে মসজিদ গলির ওই জুয়েলারি দোকানে মাত্র দেড় মিনিটে আড়াইশ' ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ এক লাখের বেশি টাকা ডাকাত দল লুটে নিয়েছে বলে দাবি জুয়েলার্স মালিকের। তবে ডাকাতদলের সবাই মুখোশ পরা ছিল না। দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে ডাকাতির এ ঘটনা ধরা পড়েছে। এই ফুটেজ দেখেই ডাকাতদের সনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
ডাকাতদের ছোড়া হাতবোমার স্প্লিন্টারের আঘাতে পৃথক দুই দোকান কর্মচারী ও শামীম জুয়েলার্সের তিন স্টাফ আহত হন।
শামীম জুয়েলার্সের মালিক ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী শাহাব উদ্দিন জানান, মাগরিবের নামাজ আদায় করতে তিনি মসজিদে গেলে ডাকাত দল দোকানে হামলা চালায়। এ সময় মসজিদ থেকে তিনি প্রায় ৯/১০টি হাতবোমা বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনতে পান।
জুয়েলার্সের কর্মচারীরা জানান, সন্ধ্যায় ২০/২২ জনের সশস্ত্র ডাকাত দল দু'টি মাইক্রোবাসে করে পৌর বাজারের মসজিদ গলিতে প্রবেশ করে। এদের মধ্যে ৮/৯ ডাকাত দোকানে প্রবেশ করে কয়েকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ডাকাতরা দোকানের প্রবেশমুখে বেশ কয়েকটি হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটালে চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। মাত্র দেড় মিনিটের ব্যবধানে ডাকাতরা দোকানের প্রায় আড়াইশ' ভরি স্বর্ণ লুটে নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ব্যবসায়ীরা জানান, সাদা ও কালো রঙের দু’টি মাইক্রোবাসে করে ডাকাতরা মসজিদ গলির উভয় দিকের প্রবেশ মুখে নামে। এ সময় সাদা রঙের মাইক্রোবাসটি গলির পশ্চিম দিকের প্রবেশ পথ ও কালো রঙের মাইক্রোবাসটি পূর্বদিকের প্রবেশ পথে আড়াআড়িভাবে রেখে প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয়। একাধিক ব্যবসায়ীর অভিযোগ, প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পৌর বাজার এলাকায় জোরারগঞ্জ থানা পুলিশের একটি টিমকে টহল দিতে দেখা গেলেও রহস্যজনক কারণে ডাকাতির সময় পৌর বাজারে কোনো থানা পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি। করেরহাট রোডের মুখে কয়েক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য দায়িত্বরত থাকলেও তারা এগিয়ে আসেননি।
অন্যদিকে, ডাকাতদের হানা দেওয়ার বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে থানায় জানানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে জোরারগঞ্জ থানার দূরুত্ব মাত্র ২০০ গজের মধ্যে হলেও ডাকাতরা চলে যাওয়ার প্রায় ১৫ মিনিট পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ।
জোরারগঞ্জ থানার তদন্ত কর্মকর্তা সেকেন্ড অফিসার বিপুল দেবনাথ জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই ডাকাতরা পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। ডাকাতদের শনাক্তে শামীম জুয়েলার্সের দু'টি সিসিটিভি ফুটেজ ও মসজিদ গলির একাধিক দোকানের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/ এস আহমেদ