অ্যানেসথেশিয়া বা কোনো অপারেশন থিয়েটার ছাড়াই খোলা আকাশের নিচে বাড়ির উঠানে বসে কাঁচি দিয়ে গৃহবধূ নূরজাহান বেগমের (২২) টনসিল অপারেশন করলেন মো. সিরাজুল ইসলাম নামে এক পল্লী চিকিৎসক। শঙ্কটাপন্ন গৃহবধূ এখন গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালে মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনায় গাইবান্ধা জেলা সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু চৌধুরী বাদী হয়ে সিরাজুলকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। পল্লী ডাক্তার সিরাজুল এখন পলাতক।
গৃহবধূ নূরজাহান বেগম সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ইউনিয়নের চকবরুল গ্রামের আবদুল খালেকের মেয়ে ও সাঘাটা উপজেলার পদুমশহর গ্রামের আমিরুল ইসলামের স্ত্রী।
গত সোমবার দুপুরে চকবরুল গ্রামের বাবার বাড়িতে নূরজাহানের জিহ্বা টেনে ধরে মুখের ভেতর কাঁচি দিয়ে কেটে টনসিল অপারেশন করেন পল্লী চিকিৎসক সিরাজুল। এতে মুখের মাংস কেটে যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই গৃহবধূ। পরে পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নূরজাহান বেগমের বাবা আবদুল খালেক বলেন, কিছুদিন ধরে তার মেয়ে টনসিল রোগে ভুগছিলেন। তার টনসিল ভালো করতে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা চালানো হয়। কিন্তু তাতে কোনো উপকার হয়নি। এরপর চিকিৎসার জন্য পল্লী চিকিৎসক মো. সিরাজুল ইসলামের শরণাপন্ন হন তারা। সোমবার দুপুরে নূরজাহানকে বাড়ির আঙ্গিনায় বসিয়ে খোলা আকাশের নিচে অপারেশন শুরু করেন সিরাজুল। তিনি নূরজাহানের জিহ্বা টেনে ধরে কাঁচি দিয়ে টনসিলের জায়গার মাংস কেটে ফেলেন। এতে তার মুখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে।
এসময় নূরজাহানের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে যান তার বাড়িতে। নূরজাহানের মা বেলী বেগম বলেন, টনসিল অপারেশনের জন্য তার মেয়েকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তারা। কিন্তু সিরাজুল তাকে রংপুরে নিয়ে যেতে দেননি। তিনি বলেছিলেন, বাড়িতেই টনসিল কাটলে ভালো হয়ে যাবে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মেহেদী হাসান জানান, সিরাজুলের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/ এস আহমেদ