বগুড়ায গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির সঙ্গে হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এতে শীতের তীব্রতাও বেড়েছে। পৌষের বৃষ্টি আর হাঁড় কাপানো শীতে বগুড়ার ১২টি উপজেলায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। এ অবস্থায় সামর্থবানরা ঘরে অবস্থান করতে পারলেও গরীবের পক্ষে তা সম্ভব হয়ে উঠছেনা। জীবন ধারণের জন্য এই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রচন্ড শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই চলতে হচ্ছে তাদের।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। মেঘে ঢাকা আকাশে দিনভর এই বৃষ্টি ঝড়ে। ফলে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। দিনমজুর কাশেম আলী, হাছেন আলী, বদিউজ্জামান জানান, বৃষ্টির সঙ্গে হিমেল বাতাস বইতে থাকায় কাজের সন্ধানে বের হতে পারছেন না। এই অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
এছাড়া শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বাড়ির উঠানে খড় কুঠো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। রিকসা চালক মাহফুজার রহমান মাফু জানান, ঘরে স্ত্রী ছাড়াও তিনটি সন্তান রয়েছে। প্রতিদিন রিকসা চালিয়ে যে টাকা আয় হয় তা দিয়েই সংসারের খরচ চালাতে হয়। একদিন রিকসা না চালালে তাদের মুখে ভাত তুলে দেয়া সম্ভব হয় না। তাই বৃষ্টি ও শীত উপেক্ষা করেই বাড়ি থেকে বের হয়েছি।
এদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শেরপুর উপজেলার নদীর উপকূলবর্তী সুঘাট, খানপুর, খামারকান্দি, গাড়িদহ, শাহবন্দেগী ও মির্জাপুর ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে ব্যাপকহারে শীতজনিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিদিনই অসংখ্য রোগী শীতজনিত রোগের ওষুধ কিনতে শহরের বিভিন্ন ওষুধের দোকানে ছুটছেন।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোখলেছুর রহমান বলেন, শীতের কারণে মানুষের নিউমোনিয়া, সর্দ্দি, জ্বর, কাশি, আমাশয় রোগ হচ্ছে। এসব রোগে মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি রোগী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসছেন। সাধ্যানুযায়ি তাদের চিকিৎসা সেবাও দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খাজানুর রহমান জানান, তীব্র শীত আর এই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে সরিষার উপকার হলেও আলু ক্ষেতে রোগ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই আলু চাষিদের সতর্ক থাকতে হবে। সময়মত প্রয়োজনীয় কীটনাশক প্রয়োগ করার পরামর্শ দেন তিনি ।
বিডি প্রতিদিন/১০ জানুয়ারি ২০১৭/হিমেল